লোককাহিনি (ত্রিপুরার) | ভাদ্র ১৪৩১



 নদীর নাম ত্যুইচং











রাজীবকুমার সাহা
উদয়পুর, ত্রিপুরা



 

তখনও ভোরের আলো ফোটেনি ঠিক করে। ত্রিপুরদেশের চট্টগ্রামের দুর্গম পাহাড়ের কোলে এক চাষির ঘর আলো করে জন্ম নিল দুই যমজ বোন—ত্যুইচং আর মুঈঙ্গি। দেখতে দেখতে খেলায়-ধূলায়, কাজে-কর্মে কিশোরী বয়সটাকে পেরিয়ে এল দুই বোনে। ত্যুইচং আর মুঈঙ্গি এখন পূর্ণ যুবতী। গলায় গলায় ভাব তাদের। রূপে-গুণে একজন সরস্বতী তো অপরজন সাক্ষাৎ লক্ষ্মী।

দুই বোনের মধ্যে একটাই পার্থক্য, ত্যুইচং ছিল মুঈঙ্গির তুলনায় প্রবল বিদ্যানুরাগী। অনেক কষ্ট করে, একে ওকে ধরে, সাধ্যসাধনা করে বিভিন্ন শাস্ত্রে বিদ্যার্জন করেছিল সে।

সে-বার বৈশাখ মাস পড়তেই দুই বোনে রওনা দিল দিদিমার বাড়ি। ও-বাড়ি খুব দূরে নয়। দুই বোনে যে-টিলায় থাকে তা থেকে তিনটে টিলা বেয়ে উঠে নেমে গেলেই দিদিমার টংঘরটা। আধবেলার মধ্যেই পৌঁছে যাওয়া যায়।

ঘর থেকে নেমে জংলাপথে পা ফেলতেই কাঠফাটা রোদ্দুরটা যেন চাগিয়ে উঠল আরও। আজ ছ’মাসের ওপর হয়ে গেল এক ফোঁটা বৃষ্টি নেই। জ্বলে-পুড়ে খাক হয়ে যাচ্ছে চারদিক। নদীনালা, ছড়া-ঝোরা সব খটখট করছে। পথেঘাটে, জুমে, ক্ষেতে লোকের দেখা পাওয়া ভার। পারতপক্ষে কেউ ঘর ছেড়ে বাইরে পা রাখছে না। ত্যুইচং আর মুঈঙ্গিও এই খরায় এতটা পথ পাড়ি দেওয়ার সাহস করত না যদি না দিদিমার মৃত্যুশয্যায় দিন গোনার খবর আসত। মা-বাবা বেঁচে থাকলে হয়তো মেয়েদের ঘরে রেখে ওরাই চলে যেত ওখানে।

তখন একটা টিলা বেয়ে ওঠে ঢাল ধরে নেমেছে সবে দুই বোনে। মুঈঙ্গি হাঁপাতে হাঁপাতে কাঁধ খামচে ধরল ত্যুইচংয়ের। শুকনো ঢোঁক গিলে কোনোমতে বলল, “ও দিদি, জল দে। তেষ্টা পেয়েছে ভীষণ।”

ত্যুইচং চমকে ওঠে দাঁড়িয়ে পড়ে। অপরাধীর মতো মুখ করে বলে, “সে তো দরজার বাইরেই রয়ে গেছে মনে হচ্ছে রে। দরজা বন্ধ করবার তাড়ায়… দারুণ ভুল হয়ে গেল একটা। ইস্‌!”

“আনিসনি? আমি যে তোর হাতে বাঁশের চোঙাটা ভরতি করে দিলাম! ফেলে এলি?” প্রচণ্ড বিরক্ত হল মুঈঙ্গি।

ত্যুইচং বোনের হাত ধরে অনুনয় করে—“একটু সবুর কর বোনটি। দুটো বাঁক পেরোলেই জঙ্গল শেষে বাড়িঘর পড়বে। তখন খাস। আমারও তো তেষ্টা পাচ্ছে।”

“কোনও কথা শুনতে চাই না আমি। এক্ষুনি জল চাই আমার। তেষ্টায় বুক ফেটে যাচ্ছে।” তেতো মুখে নিজের বক্তব্য জানিয়েই অনড় দাঁড়িয়ে পড়ে মুঈঙ্গি।

বোনের আচমকা এই রূঢ় ব্যবহারে ভীষণ আহত হল ত্যুইচং মনে মনে। মুখে ক্লিষ্ট হাসি ফুটিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করল—“কী অনর্থক ছেলেমানুষি শুরু করেছিস, বল তো? এগিয়ে চল, জলের ব্যবস্থা হয়ে যাবে’খন। চল লক্ষ্মীটি, রোদের তেজ বাড়ছে যে।”

এ-কথায় মুঈঙ্গির জেদ যেন আরও চেপে গেল। পাথরের মতো শক্ত হয়ে ঝটকা মেরে হাত ছাড়িয়ে নিল দিদির। ত্যুইচং পড়ল মহাবিপদে। চারদিকে তাকিয়ে বলল, “চেয়ে দেখ, কোত্থাও এক ফোঁটা জল নেই। মাঠঘাট, নদীনালা সব শুকিয়ে আছে। এখন আমি কোত্থেকে জল এনে দিই, বল!”

মুঈঙ্গি থমথমে স্বরে কেটে কেটে জবাব দিল, “আমি মরে গেলেও জল না খেয়ে এক পাও নড়ব না এখান থেকে। তুই আনিসনি কেন চোঙাটা, বল? এখন জল কোত্থেকে আনবি, তুই জানিস।”

ত্যুইচংয়ের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। উপায়ান্তর না দেখে আনমনে জিজ্ঞেস করে, “তার মানে তোর কাছে একটুকু জল আমার চেয়ে বেশি হয়ে গেল? তখন থেকে গোঁ ধরে রয়েছিস। কত করে বলছি চল, চল…”

“কেন, নয় কেন, অ্যাঁ? জল না পেয়ে যদি মরে যাই তখন পারবি ঠেকাতে?” ঝাঁঝিয়ে ওঠে মুঈঙ্গি।

ত্যুইচং মুহূর্তে পাথরের মতো হয়ে গেল মুখের ওপর বোনের এই জবাব শুনে। তাকিয়ে রইল একদৃষ্টে মুঈঙ্গির জ্বলন্ত চোখে। চোখ ফেটে জল বেরিয়ে এল তার। মাথা নীচু করে একটুক্ষণ ভেবে নিয়ে চোখ তুলল ত্যুইচং। বলল, “ঠিক আছে। জলের ব্যবস্থা করছি আমি। তুই চোখ বুজে পেছন ফিরে দাঁড়া। খবরদার, আমি ডাক না দেওয়া অবধি চোখ খুলবি না। নে, ঘোর।”

মুঈঙ্গি চোখ বুজে ঘুরে দাঁড়ায়। অচিরেই কপালে একটা স্নেহের স্পর্শ পেতেই চোখের পাতা কেঁপে উঠল তার। সঙ্গে-সঙ্গেই আদেশ এল কানে—“উঁহু, একদম চোখ খুলবি না। যতক্ষণ না আমি ডাকছি। মনে থাকে যেন।”

একটু পরেই দিদির কণ্ঠে সুরেলা বৈদিক মন্ত্রের উচ্চারণ শুনতে শুনতে ধীরে ধীরে তন্ময় হয়ে পড়ল মুঈঙ্গি।

খুব বেশিক্ষণ কাটেনি। কোত্থেকে ত্যুইচংয়ের মিষ্টি ডাকে চোখ খুলে ঘুরে তাকাল মুঈঙ্গি। আর সঙ্গে সঙ্গে মুখের আলো গেল মিলিয়ে। ধীরে ধীরে চোখে ফুটে উঠল ভয়ার্ত চাহনি। দিদি কই? কেউ তো নেই চারদিকে। আছে শুধু রোদের তাপে ঝলসে যাওয়া ঝোপঝাড় আর ঠিক পায়ের কাছ দিয়ে কুলকুল বয়ে যাওয়া শীতল জলের এক স্বচ্ছতোয়া নদী। এ কোত্থেকে এল এটুকুর মধ্যে! অবাক বিস্ময়ে একটুক্ষণ তাকিয়ে থেকেই তড়বড় করে নদীতে নেমে পড়ল মুঈঙ্গি। তর সইছে না আর। আঁজলা ভরে প্রাণ ঠান্ডা করে জল খেল সে। তারপর দিদির খোঁজে বেরোল। না, সারা গাঁয়ের লোক জড়ো করেও কোথাও দিদির খোঁজ পেল না মুঈঙ্গি। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে কাঁদতে লাগল সে।

এলাকায় ত্যুইচংকে পুণ্যবতী এক বিদুষী হিসেবেই চিনত সবাই। বয়োজ্যেষ্ঠরা বুঝে গেলেন যে, ভুঁইফোঁড় এই নদী আর কেউ নয়, স্বয়ং ত্যুইচংই। আপন প্রাণ বলিদান দিয়ে এই নদীর সৃষ্টি করেছে সে। গাঁওবুড়োর পরামর্শে নদীর নাম হল ত্যুইচং।

হইহই করে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল এই অবিশ্বাস্য ঘটনা। পাহাড়-পর্বত ডিঙিয়ে নতুন এক নদী বয়ে চলেছে রাজপ্রাসাদের পাশ দিয়েই। সংবাদ চট্টগ্রামরাজের কানে যেতেও বিলম্ব হল না। তলব পেয়ে মহামন্ত্রী রাজপ্রাসাদে উপস্থিত হতেই হুকুম হল—“অবিলম্বে সে-গাঁয়ে গুপ্তচর পাঠান মহামন্ত্রী। আমি ঘটনাটার আদ্যোপান্ত জানতে চাই।”

গুপ্তচরের সংবাদের ভিত্তিতে তিনদিনের মাথায় চারজন অশ্বারোহী এসে দাঁড়াল মুঈঙ্গির সামনে। পরনে তাদের রাজসৈনিকের বেশ। কোমরে ঝুলছে কোষবদ্ধ তলোয়ার। মুঈঙ্গি সেই থেকে নদীপাড়েই বসে আছে গাছতলায়। হাজারো পীড়াপীড়িতেও এক চুল নড়ানো যায়নি তাকে। এক সৈনিক ঘোড়ার পিঠ থেকে লাফিয়ে নেমেই জিজ্ঞেস করল, “তোমার নামই তবে মুঈঙ্গি?”

মুঈঙ্গি একবারটি মাথা তুলে তাকিয়ে চোখ নামিয়ে নিল। চোখ তো নয়, যেন রক্তজবা। কেঁদে কেঁদে ঢোল হয়ে আছে। সে কোনও জবাব দিল না। শান্ত ত্যুইচং বয়ে যাচ্ছে আপন গতিতে।

সৈনিক এবারে গলা কড়া করল—“তোমাকে রাজবাড়ি যেতে হবে। চলো, মহারাজের হুকুম।”

এবারে মুখ খুলল মুঈঙ্গি। ঘাড় শক্ত করে উত্তর দিল, “আমি এখান থেকে কোত্থাও যাব না। দিদি কখন চলে আসবে, আমাকে না পেলে ভয় পেয়ে যাবে। তোমরা মহারাজকে বলো গিয়ে যে দিদি ফিরে এলেই আমরা দুই বোনে গিয়ে প্রণাম করে আসব তাঁকে। তোমরা এখন যাও, বিরক্ত কোরো না।”

কিন্তু সৈনিক মুঈঙ্গির নয়, রাজা-হুকুমের দাস। এক ঝটকায় তুলে নিল মুঈঙ্গিকে ঘোড়ার পিঠে। তারপর ঘোড়া ছুটিয়ে দিল রাজধানীর উদ্দেশ্যে।

ভরা রাজসভায় হাতজোড় করে দাঁড়াল মুঈঙ্গি। রাজা আদ্যোপান্ত শুনলেন মনোযোগ দিয়ে। অনেক জেরা হল, কঠোর শাস্তির ভয় দেখানো হল। কিন্তু মুঈঙ্গি ওই ত্যুইচং নদীর সৃষ্টির রহস্য ব্যক্ত করতে পারল না। তার এক কথা—দিদি আসবে, তারপর দু-বোনে মিলে বাড়ি ফিরে যাবে।

প্রশ্নের পিঠে প্রশ্ন করতে করতে মন্ত্রী-পারিষদ সব একে একে হাল ছেড়ে দিল। কিন্তু মুঈঙ্গি মুক্তি পেল না। চট্টগ্রামরাজ তার তেজ আর রূপে মুগ্ধ হয়ে তাকে রানি করে রাজপ্রাসাদে স্থান দেওয়ার প্রস্তাব দিলেন। মুঈঙ্গি সঙ্গে সঙ্গে জানিয়ে দিল—“মহারাজ, আমি আপনার প্রস্তাব গ্রহণ করতে পারি, কিন্তু তাতেও আমার জবাব একই থাকবে। আমি ওই নদীর রহস্য জানি না। যা জানি, সব খুলে বলেছি আপনার সামনে।”

রাজা মুঈঙ্গির সততায় মুগ্ধ হলেন। কয়েকদিনের মধ্যেই ধুমধাম করে রাজার সঙ্গে বিয়ে হয়ে গেল মুঈঙ্গির। রাজবাড়ির অন্দরে বিশেষ মহলে স্থান হল তার।

দেখতে দেখতে বছর ঘুরে গেল। নির্দিষ্ট সময়ে ফুটফুটে এক রাজকুমারের জন্ম দিল সে। কিন্তু বিধি বাম। রাজবাড়িতে মুঈঙ্গির সবচেয়ে বড়ো শত্রু যে স্বয়ং পাটরানি। এক নগণ্য চাষার মেয়ের রাজরানি হয়ে ওঠা সহ্য হয় কারও? আঁতুড়ঘর থেকে গোপনে ঘুমন্ত শিশুটাকে তুলে নিয়ে ভাসিয়ে এলেন ত্যুইচংয়ের জলে। ত্যুইচং বুকে টেনে নিল একে। রাজা জানতেও পারলেন না। জ্ঞান ফিরলে মুঈঙ্গি জানল সে মৃত সন্তান প্রসব করেছে।

আবার বছর ঘুরল। ঘটনার তারতম্য হল না। মুঈঙ্গি আবার এক পুত্রসন্তানের জন্ম দিল; পাটরানি ত্যুইচংয়ের জলে ভাসিয়ে এলেন। বিমর্ষ মহারাজের রাজপাটে মন বসে না। মুঈঙ্গিকে একরকম ত্যাগ করেছেন।

দুই মৃত সন্তানের জন্ম দিয়ে মুঈঙ্গিও মানসিকভাবে ভেঙে পড়ল পুরোদস্তুর। খায় না, দায় না, কারও কথার জবাব দেয় না, শুধু ঝিম মেরে বসে থাকে এককোণে। অত সুন্দর লক্ষ্মীপ্রতিমাটি শুকিয়ে দড়ি হয়ে গেল।

শেষে একদিন রাত থাকতেই ঘুম থেকে উঠে পড়ল মুঈঙ্গি। সন্তর্পণে খিড়কি দোর গলে পায়ে পায়ে গিয়ে দাঁড়াল ত্যুইচংয়ের পাড়ে। কনকনে জলো বাতাস শরীরে কাঁটা ধরিয়ে দিচ্ছে। গাছের ডালে ডালে পাখিরা জেগে উঠছে ধীরে ধীরে। কিন্তু মুঈঙ্গির সেদিকে হুঁশ নেই। তার চিন্তাশক্তি, স্পর্শ-অনুভব নিজের নিয়ন্ত্রণে নেই আজ আর। সে ত্যুইচংয়ের গভীর বুকে ঝাঁপিয়ে পড়তে চায়।

কিন্তু এ কী! নদীর জল থেকে এ কে উঠে আসছে ধীরে ধীরে? কে এই নারী?

সারা মুখে প্রশান্তির দীপ্তি জ্বেলে মুঈঙ্গি চিৎকার করে উঠল, “দিদি, তুই? তুই-ই তাহলে…”

ত্যুইচং কাছে এসে দাঁড়াতেই মুঈঙ্গি আকুল হল।—“তুই আমাকে বাঁচাতে একদিন নিজেকে বলিদান দিয়েছিলি দিদি। আজ দ্যাখ, আমি নিজেই তোর বুকে নিজেকে বিলিয়ে দেব বলে চলে এসেছি। আজ আমার এতটুকুও ভয় নেই।”

মুচকি হেসে বোনের মাথায় হাত রাখতেই ত্যুইচংয়ের দু-পাশ ঘেঁষে কোত্থেকে এসে দাঁড়াল দুই দেবশিশু। মুঈঙ্গি আশ্চর্য চোখে ভালো করে তাকাতে না তাকাতেই দুই ভাইয়ে মিলে গান ধরে—

“জন্ম মোদের রাজার ঘরে, বুকে নিল মাসি

স্বর্গ চেয়েও দামি মা গো, তোমার মুখের হাসি।

জন্মদাতা রাজা মোদের এই কথাটি জেনো,

রাহুর ছায়ায় রাজ্য যে যায়, এই কথাটি মেনো।

কালনাগিনী শত্রু যে ওই বসে পাটের ’পরে

তুলে রাজা স্ত্রী-পুত্তুর, নেবেন আপন ঘরে।”

 

মুঈঙ্গির বুঝতে আর কিছুই বাকি রইল না। একটানে দুই রতনকে বুকে টেনে চোখ বুজে রইল দীর্ঘক্ষণ। দুই গাল বেয়ে নামতে লাগল অঝোর ধারা।

ধীরে ধীরে দুই ভাইয়ের এই গান সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ল। একদিন দৈবক্রমে রাজার কানে যেতেই চমকে উঠলেন তিনি। কিছুই আর বুঝতে বাকি রইল না তাঁর। পাটরানিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়ে ঘরে তুলে নিলেন দুই পুত্র আর তাদের দুঃখিনী মাকে।

তারপর একদিন ঢাকঢোল পিটিয়ে, লোকলশকর নিয়ে পুজো করে এলেন ত্যুইচংয়ের শান্ত শীতল জলে। জলে নেমে মুঈঙ্গি কেঁদে বুক ভাসাল। তার চোখের জল মিশে গেল ত্যুইচংয়ের জলে। ত্যুইচংয়ের সারা দেহে ঢেউ তুলল এক আকুতি—“দিদি, পরজন্মে যেন এই অভাগিনী তোর জন্যে নিজের জীবনটা বলিদান দিতে পারে, এই আশীর্বাদটুকু শুধু করিস।”