দেবাশিস হাজরা

কলকাতার জীবনানন্দ সভাঘরে বিগত ২৫ জুলাই, ২০১৮ তারিখে ‘বর্ষালিপি’ পত্রিকার দশম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত উৎসবমুখর সন্ধ্যায় আমার ‘দাদামণি’-র নিবিড় স্নেহচ্ছায়ায় ছন্দ-বন্দি আমার একটি চির-অমলিন নিজস্বী।

  আমি তোমার কাছে ঋণী,       ওগো আমার ‘দাদামণি’









দেবাশিস হাজরা





 

এই যে আমার এই লেখাটির নামকরণ করতে গিয়েও যে ছন্দ এসে গেল, এর নেপথ্যেও তিনি। হ্যাঁ, যাঁর কাছে আমি ঋণী; তিনিই তো আমার বড্ড আপন, প্রাণপ্রিয়দাদামণিএ যেন এক জন্মজন্মান্তরের সম্পর্ক। বিশ্বাস করুন বা না-ই করুন, এ আমার একান্ত ব্যক্তিগত অনুভবের সুখস্মৃতিমণ্ডিত এক ভাষাচিত্র। কোত্থেকে যে শুরু করব আর কোন কোন কথা বলব, সেটাই তো ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না! তবুও চেষ্টা করছি যতটা সম্ভব দাদামণিকে নিয়ে আমার স্মরণীয় অভিজ্ঞতার ঝুলি উপুড় করতে—কেমন? তবে এই অপ্রত্যাশিত সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আমি লেখার শুরুতেই আমার অকুণ্ঠ অভিনন্দন আর অশেষ কৃতজ্ঞতা জানিয়ে রাখি এইকিশোর বার্তাপত্রিকার সাহিত্যমনা ও সংস্কৃতি-দরদী পরিচালকমণ্ডলীর প্রত্যেক বন্ধুকে

বুঝলে কিশোর বার্তা, তখন আমিও কিশোর। সবে মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়েছি। বাবার বদলির চাকরির সূত্রে তখন পড়ছি উত্তরবঙ্গের কোচবিহার জেলা সদর শহরের ঐতিহাসিক রাজবাড়ির অদূরেই অবস্থিত রামভোলা উচ্চ বিদ্যালয়ে। আমি তখন দ্বাদশ শ্রেণিতে বাণিজ্য বিভাগের ছাত্র। বাবা চিনিয়ে দিয়েছিলেন জেলা তথ্যকেন্দ্র এবং জেলা গ্রন্থাগারের রিডিং রুম দুটি। সাহিত্যের কী এক অমোঘ টানে বিকেল হতেই ডায়েরি-পেন নিয়ে প্রায়ই ছুটতাম সেখানে। আর এভাবেই একদিন খুলে গেল তখনকার একটি দৈনিক সংবাদপত্রওভারল্যান্ড’-এর প্রতি বুধবারের সাপ্তাহিকসোনার কাঠিবিভাগের দরজা। পড়লামসবুজবুড়োর চিঠিপ্রাণের ছন্দে আর মনের আনন্দে পাঠিয়েও দিলাম একটা চিঠি। তারপর সেই ১৯৯২ সালের ১৪ অক্টোবর, বুধবার হঠাৎইসোনার কাঠিবিভাগ খুলতেই চোখে পড়ল আমার নাম ও লেখাটি। কী যত্ন করে ও একটু এডিট করে একটি ছাত্রকে সেদিন এক কলম অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন যিনি; পরে জেনেছি, ছোট্ট বন্ধুদের ভালোবাসারসবুজবুড়ো’-র ছদ্মবেশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা সেই মজার মানুষটিই হলেন মজার ছড়াকার-কবি ভবানীপ্রসাদ মজুমদার

এরপর সুদীর্ঘ বারো বছরের ব্যবধান। কিন্তু এরই মাঝে তখন থেকেই একটু একটু করে প্রস্ফুটিত হয়ে বিকশিত হতে থাকল সাহিত্য ও সুস্থ সংস্কৃতির অঙ্গনে আমার নিরন্তর পদচারণা। আর এই সময়ের মধ্যেই স্নাতক হলাম। হঠাৎই এক পথ-দুর্ঘটনার কবলে পড়ে গুরুতর জখম হয়ে চিকিৎসা করাতে ভালোলাগার শহর কোচবিহারকে বিদায় জানিয়ে চলে এলাম কলকাতায়। কিছুটা সুস্থ হয়েই শুরু করলাম চাকরির পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তুতি। একনিষ্ঠ প্রস্তুতি আর প্রবল আত্মবিশ্বাসের মিশেলে পরীক্ষা দিয়ে সরকারি চাকরিও পেলাম। এবার নিজেদের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর থেকে কলকাতা অফিসে নিত্য যাতায়াতের পথে শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরের একটি বুক স্টল থেকে একদিন সংগ্রহ করলামআজকের পল্লীকথানামক একটি ম্যাগাজিন। আর তার ভিতরে প্রতি সংখ্যাতেই থাকত একটি নির্ধারিত লাইনের সঙ্গে মিলিয়ে আরও তিন লাইন লিখে পাঠানোর এক মজারছড়া-গড়া’-র আসর। ব্যস! আমাকে আর পায় কে? চলতে-ফিরতে ছড়া গড়ছি আর পাঠাচ্ছি। ছাপাও হচ্ছে। আবার পাঠাচ্ছি। এইভাবেই একদিন সুযোগ এল ওই ছড়া-গড়ার আসরে চিঠি লেখার। ওই আসর পরিচালকের নাম নিশ্চয়ই আর বলে দিতে হবে না? পরিচালক মহাশয় আমার প্রাণখোলা পত্রটি পেয়ে অত্যন্ত আহ্লাদিত হয়ে পরের সংখ্যায় আনন্দে বুক ফুলিয়ে বড়ো বড়ো অক্ষরে ওই বিভাগেই সবাইকে তাঁর অভিব্যক্তি জানিয়ে দিলেন

সাহস পেলাম। যদ্দুর মনে পড়ে, এর পরবর্তী সময়েই কোনও একদিন ওই বইতেই দেওয়া ওঁর ল্যান্ড ফোন নম্বরে তখনকার টেলিফোন বুথ থেকে ফোন করে বসলাম। তার পর...

তারপর এক সন্ধ্যায় কলেজ স্ট্রিটে এল সেই সুবর্ণ সময়। অফিস ফেরত ওঁরই বলে দেওয়ামামুর দোকানখুঁজে খুঁজে, ভালো করে নিজের শার্ট-প্যান্ট গুঁজে গুঁজে, ছন্দ আওড়ে (বুঝে বুঝে) হাজির হলাম মুখোমুখি। পরম আন্তরিকতায় জড়িয়ে নিলেন—প্রাণ ভরিয়ে দিলেন যেন। প্রায় প্রতি সপ্তাহেই অফিস ফেরত দেখা করতে চলে যেতাম আর অবাক হয়ে দেখতাম কলেজ স্ট্রিটের নির্দিষ্ট স্থানে ওঁর আসার খবর পেয়ে শুধু আমি নই, লাইন দিয়ে অপেক্ষা করতেন লেখক-প্রকাশক-সম্পাদক থেকে শুরু করে প্রুফ-রিডার, সংগীতশিল্পী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কর্মকর্তারাও পর্যন্ত! আর আশ্চর্যের হলেও সত্যি, আমার মতো অনামি থেকে নামিদামি ব্যক্তিত্বদেরও কী অসম্ভব আকুতি থাকত ওঁর স্নেহ-পরশ পাওয়ার! মাঝে মাঝে মুড়ি আর গরমাগরম তেলেভাজাও অর্ডার দিয়ে আনানো হত সবার জন্য। দাদামণির খুব প্রিয় গরম তেলেভাজা। খেতে খেতে চলত আড্ডা। সবাইকেই তিনি আপন করে নিতেন তাঁর সহজ-সরল মিষ্টি ব্যবহারের মধ্য দিয়ে। তবে হ্যাঁ, হিরের মতো খাঁটি মানুষটি কিন্তু তাঁর অভিজ্ঞতা ও বিচক্ষণতার মধ্যে দিয়ে মনে মনে যাচাই করে নিতেন কে ঠিক কোন মনোভাবাপন্ন মানুষ। এটি আমার একান্ত ব্যক্তিগত অনুভব হলেও আমার মনে হয় না আমি ভুল বলছি। এখানেই শ্রী ভবানীপ্রসাদ কিন্তু তাঁরকবি’-র গণ্ডি ছেড়ে বেরিয়ে নিজের অজান্তেই নিজেকে প্রতিনিয়ত তুলে ধরেছেন নির্ভেজাল, সৎ, আদর্শ ও বিবেকবান এক ব্যতিক্রমী মানুষ হিসেবে

আর ঠিক এখানেই আমি নিজেকে একজন পরম সৌভাগ্যবান বলে মনে করছি, কারণ আমি ওঁর পরম সান্নিধ্য পেয়ে ধন্য হয়েছি। যতই ওঁর সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতা বাড়তে লাগল, ততই মুশকিলে পড়লাম যে ঠিক কী নামে ওঁকে সম্বোধন করবো তাই ভেবে। একদিন নির্দ্বিধায় সরাসরি ওঁর কাছেই জিজ্ঞেস করলাম, “কী নামে ডাকব বলুন তো আপনাকে?”

উনি হেসে উত্তর দিলেন, “নামে কী যায় আসে!

বাড়ি ফিরে ভারি চিন্তায় পড়ে গেলাম নাম নিয়ে। মাকে বললাম, “উনি তো ছন্দের জাদুকর, তাই ভাবছি ওঁকেছন্দ-দাদুমণিনামে ডাকব, নাকি অন্য কিছু।

মা তৎক্ষণাৎ আমার জটিল সমস্যার সরল সমাধান করে দিয়ে বললেন, “কেন, দাদামণি নামে ডাকতে পারিস তো!

ব্যস, পরদিন ওঁকে জানিয়ে দিলাম আর উনিও খুশি মনে গ্রহণ করলেন আমার ওই সম্বোধন। সেই থেকেই উনি হয়ে গেলেন আমার শ্রদ্ধেয় ও সুপ্রিয়দাদামণিগর্ব করে বলে আনন্দ পাই—উনি কারও ভবানীদা, কারও ভবানীকাকু, কারও ভবানীজেঠু—ওই মানুষটিকে আজও যদি যে-কেউ জিজ্ঞেস করেন, আচ্ছা, আপনাকে দাদামণি নামে কেউ ডাকে? তাহলে কিন্তু উনি শুধু আমার নামটিই বলবেন। এক অন্তরঙ্গ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল ওঁর সঙ্গে। তাই তো কলেজ স্ট্রিটের আড্ডা সেরে আর সবাই ফিরে গেলেও আমার ফিরতে মন চাইত না। রাস্তার পাশে দাদামণি আর আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথা বলে চলতাম যতক্ষণ না হাওড়া-দাশনগরের বাস আসছে। উনি বলতেন, ‘সেই অনেক সকালে বেরিয়ে অফিস করে ফিরছ, অশোকনগর ফিরবে, অনেক রাত হয়ে যাবে, তুমি চলে যাও। আমি ঠিক বাস পেয়ে যাব।কিন্তু আমার মন মানত না। দাদামণিকে বাসে উঠিয়ে দিয়ে তারপর এক বুক প্রশান্তি নিয়ে বাড়ি ফিরতাম। বাড়ি ফিরে আবার একে অপরের পৌঁছ-সংবাদ নিতাম

সত্যি!আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম!আমরা একই সঙ্গে অনুষ্ঠান করেছি। কলকাতা বইমেলায় ওঁর সংবর্ধনা-সভায় দর্শকাসন থেকে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছি। ওঁর কবিতা কণ্ঠে নিয়ে আমার অফিস মহাকরণের বিভিন্ন দপ্তর থেকে শুরু করে অশোকনগর, কলকাতার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অগুনতি দর্শক-শ্রোতাবন্ধুর মন জয় করতে পেরে ধন্য হয়েছি; যার কৃতিত্বটা আমি মনে করি সম্পূর্ণই দাদামণির দুরন্ত প্রতিভাময় লেখনীর ওপরই বর্তায়। শুধু কি তাই, বিগত ২০০৭ সালের ২৬ মে থেকে ১ জুন সুদূর বর্ধমান আসানসোলের কবিতীর্থ চুরুলিয়ায় নজরুল অ্যাকাডেমির উদ্যোগে আয়োজিতনজরুল মেলা’-র এক সন্ধ্যায় আমন্ত্রিত আবৃত্তিকার হিসেবে কলকাতা থেকে অনুষ্ঠান করতে যাওয়ার আগে একদিন অফিস থেকে বেরিয়ে নিজের বাড়ি না ফিরে সোজা উপস্থিত হয়েছিলাম দাদামণির দক্ষিণ শানপুরের বাড়িতে। মনোযোগ দিয়ে শুনলেন আমার আবৃত্তি। দাদামণির সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়েই সেদিন ঠিক করলাম কী কী কবিতা শোনাব সেখানে আর বলাই বাহুল্য, কবি নজরুলের জন্মভিটেতে দাঁড়িয়ে আমার একক কণ্ঠে পরিবেশিত একটানা পঁচিশ মিনিটের অত্যন্ত সফল ওই অনুষ্ঠানের সিংহভাগ কবিতাই ছিল কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে দাদামণির লেখা বিভিন্ন আঙ্গিকের নিবেদন। মনে আছে, ওই অনুষ্ঠানে মঞ্চে ওঠার কিছুক্ষণ আগেও ছোট্ট কি-প্যাড ফোনে দাদামণিকেই ফোন করে ঝালিয়ে নিয়েছিলাম প্রথম নিবেদনটি

আমার দাদামণির কবিতা যখনই কোনও অনুষ্ঠানে কণ্ঠে তুলে নেব ঠিক করেছি, তখনই ওঁকে ফোন করে আগাম জানিয়ে দিতাম। আবার অনুষ্ঠান অবধারিতভাবে ভালো হওয়ার পরেও ছটফট করতাম কতক্ষণে ওঁকে ফোন করে সব কথা বলব ভেবে। সবসময় দাদামণি আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন, জুগিয়েছেন অনুপ্রেরণা। দু-হাত ভরে আশীর্বাদ করেছেন আমায়। আমার যে-কোনো সাফল্যের খবর শুনে উনি কী খুশিই না হতেন! হন এখনও। একটানা কখনও তিরিশ-চল্লিশ মিনিট কিংবা ঘণ্টা খানেক ধরে ফোনে কথাও হত। খুবই ভালোবাসেন আমাকে। আর সেই নিঃস্বার্থ ভালোবাসার টানে বছর ঘুরে প্রতিবার ৮ এপ্রিল রাত্রি ১২টা বাজলে সময়-ঘড়িটাই যেন মনে করিয়ে দেয় রাত পোহালেই ৯ এপ্রিল, আমার দাদামণির ছন্দময় জন্মদিন। আর আমিও যত কাজই থাকুক, ঠিক ফোন করে ছন্দের অক্ষরে ও কণ্ঠ ভরে প্রতিবছর অবধারিতভাবে দাদামণিকে জন্মদিনের নিত্যনতুন শুভেচ্ছা জানাবই জানাব

ওঁর সঙ্গে বোধ হয় আমার শেষ দেখা হয়েছিল ২০১৮ সালের ২৫ জুলাই তারিখে জীবনানন্দ সভাঘরেবর্ষালিপিপত্রিকার উদ্যোগে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে। অসুস্থ থাকায় উনি ওঁর সহধর্মিণীর সঙ্গে এসেছিলেন। ওইদিন আমি মঞ্চ থেকে দাদামণিকে ওঁর লেখাজীবন-যোদ্ধা, জানাই শ্রদ্ধাকবিতাটি আবৃত্তি করে শোনানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এমনকি দাদামণির সঙ্গে আমার একমাত্র ছবিটিও সেদিন তুলতে পেরেছিলাম ওই অনুষ্ঠানের এক ফাঁকেই। এজন্য আমি অশেষ কৃতজ্ঞ বন্ধু-দাদা কবি শ্যামাচরণ কর্মকার ও কবি ভাই কমলেশ কুমারের প্রতি। সেদিন উনি বাড়ি ফেরার সময় আমার হাতটি কিছুতেই ছাড়তে চাইছিলেন না, জানো তো?

ভাবতে খুবই কষ্ট হয়, এই প্রাণবন্ত মানুষটি আজ গুরুতর অসুস্থতায় সম্পূর্ণরূপে ঘরবন্দি। ইচ্ছে করলেও আগের মতো ওঁর সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যায় না। নিজের ফোন আর নিজে রিসিভ করতে পারেন না। তবে তার মধ্যেও কখনো-কখনো ফোনে কথা বলতে পেরেছি। একদিন আমাকে বোধ হয় অভিমান করেই বললেন, ‘তুমি তো আমার বাড়ি ভুলেই গেছো!সেই কবে থেকে ভাবছি, আবারও কোনও একদিন আমার প্রিয় দাদামণির বাড়িতে তাঁর সঙ্গে একবার দেখা করতে যাব। তাঁকে টেলিফোনে কথা দিয়েও যাওয়াই হচ্ছে না। আসলে কীভাবে আর কাকেই-বা বোঝাব, ফিরে পেতে চাই হারিয়ে যাওয়া সেইসব দিন। হারিয়েও যেন কিছুতেই হারাতে চাই না আমার আগের সেই দাদামণিকে। আবার মিলিত হতে চাই কলেজ স্ট্রিটে, নয়তো এইকিশোর বার্তাপত্রিকার উদ্যোগে আয়োজিত কোনও বার্ষিক সাহিত্যমেলায়। প্রতীক্ষা নয়, অপেক্ষারও যে আর তর সইছে না! কথাও যেন আর ফুরোতে চাইছে না মোটে। আজ তবে এইটুকু থাক, বাকি কথা পরে হবে

 


 

দা দা ম ণি’  ছ ন্দে র  খ নি

দেবাশিস হাজরা

 

আসুক যতই ঝঞ্ঝা-বিপদ

তোমার ছন্দ থামবে না!

যে ছন্দ-সূর্য উঠিয়েছ তুমি

তা কিছুতেই নামবে না!

যতই প্রতিকূল হোক এ-সময়

হোক না যতই কালো;

তোমার ছন্দ প্রতিনিয়ত

জ্বালবে আশার আলো!

সেই আলোতেই এই পৃথিবীটা

আবার হাসবে-খেলবে!

কচিকাঁচারাও তোমার ছন্দে

খুশিতেই মন মেলবে!

সূর্য-চন্দ্র যতদিন ওই

গগনে করবে বিরাজ;

তবজীবনসূর্য বাজায় তূর্য

বাজবে সকাল-সাঁঝ!

দাদামণিছন্দের খনি

ছড়া-রাজ্যের হিরে!

প্রতিটি মনন সর্বক্ষণ

থাকবে তোমায় ঘিরে!





 

সংযুক্তিকরণ:

কথা ও কাহিনী’ প্রকাশনা থেকে বিগত জানুয়ারি২০০২ সালের কলকাতা পুস্তক মেলায় প্রথম প্রকাশিত আমার ‘দাদামণি’- ‘জীবনসূর্য বাজায় তূর্য’ নামাঙ্কিত ছড়া-কবিতার অমূল্য বইখানি ‘দাদামণি’ তাঁর হাওড়া দাশনগরের নিজের বাড়ি থেকে সযত্নে গত ২৫ ডিসেম্বর২০০৬ তারিখে আমার উদ্দেশে তাঁর অগাধ সৃষ্টিসম্ভার থেকে চয়ন করে এনে একটি নয়নাভিরাম ও অনুপম বিশেষ শুভেচ্ছা-বাণী-সহ কলেজ স্ট্রিটে একদিন একটি সাহিত্য আড্ডায় আমাকে উপহার হিসেবে তুলে দেওয়ার একটি উজ্জ্বল নিদর্শন 

   

<