ছড়া - কবিতা ১ । শ্রাবণ ১৪৩১





 রং চটে













দিলীপ কুমার দাশ

দুরগাপুর, পশ্চিম বঙ্গ






































































































































এই লেখাটির      >
মুদ্রিত সংখ্য
রেজিঃ ডাকে পেতে -

 

কিশোর যখন ফলসা খুঁজত

কিশোরীরা শালুক ফুল

আকাশ পরত রোজই তখন

সাদা-কালো মেঘের দুল

 

সেদিন যখন কিশোরবেলায়

দিন ফুরাত নাও বেয়ে

কিশোরীর দল ব্রতের কথায়

মন ভরাত গান গেয়ে

 

সেসব দিনেই নদীর জোয়াড়

ডাক পাড়ত ভোরবেলা

ভাটির দেশের গয়নার নাও

মানত না তো বারবেলা

 

জল থই থই মাঠ ঘাট সব

ডাকত কিশোর কিশোরীকে

মাছের নেশায় ঝাপিয়ে পড়তে

মাছরাঙাদের রং মেখে

 

ওদের তখন সবার কাছেই

ছিল বিন্তি , খেপলা জাল

পারতও সব ধরতে দারুণ

পায়রাতেলি , চ্যাং , গজাল

 

কোন্ গাছেই না উঠতে পারত

ছেলেমেয়ে সেই দিনের

ঘরের চালেও উঠত ওরাই

প্রয়োজনে ঢেউ টিনের

 

ওরাই আবার পাড়ায় কারুর

বিয়ে হলে সব ক'জন

করবেটা যে , যার যা দরকার

জানত তা মানুষজন

 

ভোর না হতেই তাদের আবার 

পড়াশুনার কলরব

শুনত পাড়ার সব মানুষই

যতই থাক মহোৎসব

 

সেসব জীবন কোথায় এখন

একটাও তো নেই আর

সবার ঘরেই উলুকঝুলুক

স্বার্থ চেনার অন্ধকার

 

সবকিছুতেই বিধান যখন -

সিঁড়ির ধাপে পা'টা রাখ 

কাউকে দেখার দরকার নেই

নিজে আগে সামনে থাক

 

গুরুজনদের এমন কথায়

সবাই বাঁধে মালকোঁচা

রেললাইনটা নাকবরাবর

কেমন গেছে দেখ সোজা

 

দেখতে দেখতে সবাই আবার 

ভুলে বসে পিছ-দুয়ার

তখন আবার গুরুজনরাই

মাপে বসে জল কুয়ার

 

কুয়ার জলও তখন আবার 

তোলার সাধ্যি না থাকায়

টলটলে সব জল থাকতেও

বৃদ্ধাশ্রমে হাত মাথায়

 

এটাই জীবন চারদিকে আজ

সভ্যতার এই সংকটে

সময় থাকতে না দেখলে ঘর

এমনি করেই রং চটে