গল্প - ১ । আশ্বিন - ১৪৩১







 ঘোড়ার নালের আংটি 












অমিতাভ  পাল

হুগলি, পশ্চিম বঙ্গ



 

হারু আর পারু। হারু দাদা আর পারু বোন। হারুর বাবা স্টেশন রোডে রিক্সা চালান। খুব সকালে রিক্সা নিয়ে বেরিয়ে গেছেন ভাড়া ধরতে। পারুর মা ঝি খাটেন। খুব সকালে বেরিয়ে গেছেন লোকের বাড়িতে ঝি এর কাজ করতে।

বাড়িতে শুধু হারু আর পারু। বাড়িতে হারু পারুকে দেখাশোনার কেউ নেই। শাসন করারও কেউ নেই। একেবারে লাগাম ছাড়া স্বাধীন। যা ইচ্ছে তাই করে বেড়াও, যেখানে খুশি সেখানে যাও, কেউ চোখ পাকিয়ে বলতে আসবে না, ‘চোপ!’

অবশ্য চুপ করে বসে থাকার মত ছেলে নয় হারু। চুপ করে বসে থাকার মত মেয়েও নয় পারু। হাত ধরাধরি করে বেরিয়ে পড়ল তারা দু’জনে।

প্রথমে পাড়ার কাঁচা রাস্তা, তারপর মোরামের রাস্তা, তারপর পিচের রাস্তায় কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করার পর আবার একটা মোরামের রাস্তায় ঢুকল তারা। সেই মোরামের রাস্তাটা এসে শেষ হল একটা ফাঁকা মাঠে।

ঠা-ঠা রোদ্দুর। হারু ও পারুর মাথার তালু পুড়ে যাচ্ছে। পায়ের পাতায় ছ্যাঁকা লাগছে।

মাঠের মাঝখানে একটা ছোটখাটো পাহাড়। কাছে গিয়ে হারু পারু দেখল, পাহাড় বটে, তবে আসল পাহাড় নয়, জঞ্জালের পাহাড়। শহরের যত জঞ্জাল সব এখানে এনে ফেলা হয়। সেই জঞ্জাল জমতে জমতে জ্ঞজালের পাহাড় হয়ে উঠেছে।

হারু ও পারু জীবনে কখনও সত্যিকারের পাহাড় দেখেনি। তাই জঞ্জালের পাহাড় দেখেই তাদের চোখ টেরে গেল। তারা ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগল। পারু বলল, “জায়গাটা খুব নির্জন, তাই নারে দাদা?”

হারু বলল, “আশেপাশে তো দেখছি, একটাও লোক নেই।’’

কে বলল একটাও লোক নেই?”

জঞ্জালের আড়াল থেকে বেরিয়ে এল একটা লোক। লোকটা বেশ লম্বা। হারু ও পারুর তুলনায় তাকে একটা তালগাছ বলা যায়। মাথায় হাঁপড় ঝাঁপড় চুল, খোঁচা খোঁচা গোঁফদাড়ি। গায়ে তালি মারা জামা। জামাটা দেখা যায় না, বাইরে থেকে শুধু রংবেরং এর তালি দেখা যায়। পরনে হাঁটু পর্যন্ত পাজামা। হাঁটুর কাছ থেকে পাজামার পা দু’টো ছিঁড়ে গেছে। পায়ে নোংরা কিন্তু নতুন একজোড়া নাগরা। বিচিত্র তার পোশাকআশাকবিচিত্র তার হাবভাব। তাকে একজন বিচিত্রবাবু বলা যায়।

বিচিত্রবাবু সামনে এসে ঝুঁকে পড়ে হারু ও পারুকে ভালো করে দেখল। দেখেটেখে নিশ্চিন্ত হয়ে শুধোল, “তোমরা এখানে কী করছ?”

হারু বলল, “আমরা এখানে কিছু করছি না।’’

পারু বলল, “আমরা ঘুরতে ঘুরতে এখানে এসে পড়েছি।’’

হারু শুধোল, “আপনি?”

বিচিত্রবাবু বলল, “আমি পাহাড়টাকে একটু উলটে পালটে দেখছি।’’

পাহাড়টাকে উলটে পালটে দেখছি মানে?”

আপনার গায়ে কি খুব জোর?”

কে বলল আমার গায়ে খুব জোর? আমি আরও উপর জোরজুলুম করি না। কেউ কেউ তো আবার আমাকে তালপাতার সেপাই বলেও ডাকে।’’

তবে যে বললেন, পাহাড়টাকে উলটে পালটে দেখছিলেন? পাহাড় উলটানো কি চাট্টিখানি কথা?”

বিচিত্রবাবু ময়লা দাঁত বার করে হি-হি করে হাসল, “ কথাটা শুনতে ওরকম, আসলে পাহাড়ের জঞ্জাল একটু নেড়েচেড়ে দেখছিলাম।’’

জঞ্জাল নেড়েচেড়ে কী দেখছিলেন?”

আবার ওই কথার ফের, দেখছিলাম নয়, খুঁজছিলাম।’’

কী খুঁজছিলেন?”

সেভাবে নির্দিষ্ট কিছু নয়। তবে আমি জানি, খুঁজতে খুঁজতে কিছু একটা পেয়ে যাবো। ওই যে বলে না, যেখানে দেখিবে ছাই, উড়াইয়া দেখ ভাই-’’

হারু বলল, “কথাটা আমরাও শুনেছি।’’

পারু বলল, “আমার মা মাঝে মাঝেই কথাটা বলেন।’’

বিচিত্রবাবু বলল, “আমিও ওই কথাটা একটু ঘুরিয়ে অন্যভাবে বলি, যেখানে জঞ্জালের ডাঁই, নেড়েচেড়ে দেখ ভাই, পাইলে পাইতে পার অমূল্য রতন।’’

হারু শুধোল, “আপনি এখানে কবে থেকে খোঁজাখুঁজি করছেন?”

বিচিত্রবাবু বলল, “দশ বিশ দিন হতে পারে, আবার দশ বিশ বছরও হতে পারে। সময়ের হিসাব আমার ঠিক মনে থাকে না। দু’দশ দিন আগের ঘটনাকে আমার মনে হয় দু’দশ বছর আগের। আবার দু’দশ বছর আগের ঘটনাকে মনে হয় দু’দশ দিন আগের।’’

এ তো ভারি মজার ব্যাপার।’’

মজার ভাবলে মজার, নয় তো কোন মজা নেই। তবে একটা ব্যাপার আমার খুব মনে আছে। প্রথম যখন এখানে খোঁজাখুঁজি শুরু করি, তখন এখানে শুধু একটা ফাঁকা মাঠ ছিল। এখন এখানে আস্ত একটা পাহাড়। পাহাড়টা কবে যে ছোট থেকে বড় হয়ে গেল, বুঝতেই পারলাম না।’’

এটা না বোঝার কী আছে? প্রতিদিন জঞ্জাল জমতে জমতে একটু একটু করে বড় হয়েছে পাহাড়টা।’’

মাথা চুলকোতে চুলকোতে লোকটি বলল, “তা হতে পারে।’’

বিচিত্রবাবু পকেট হাতড়ে একটা জিনিস বার করল। তারপর হারু ও পারুর কাছে সরে এসে ফিস ফিস করে বলল, “দেখ তো, এটাকে চিনতে পারো কিনা?”

হারু ভালো করে দেখে বলল, “এটা তো একটা সোনার আংটি।’’

পারু বলল, “যা চক চক করছে, এ সোনা না হয়ে যায় না।”

বিচিত্রবাবু আবার মাথা চুলকোতে লাগল, “আমার সব গোলমাল হয়ে যাচ্ছে।’’

কীসের গোলমাল?”

আমি এতদিন জানতাম, আংটিটা ঘোড়ার নালের। ঘোড়ার নাল তো লোহার হয়, সোনার হয় বলে তো শুনিনি।’’

হারু বলল, “এটা ঠিক যে সাধারণত ঘোড়ার নাল লোহার হয়। কিন্তু রাজারাজড়ার ঘোড়ার নাল তো সোনারও হতে পারে।’’

কিন্তু এখন তো কোন রাজারাজড়া নেই। সুতরাং রাজারাজড়ার ঘোড়াও নেই। তাহলে সোনার নাল আসবে কোথা থেকে?”

পারু বলল, “রাজারাজড়া নেই ঠিকই কিন্তু কাঁড়ি কাঁড়ি টাকাওয়ালা লোক তো আছে। তারা কেউ ঘোড়া কিনে সখ করে ঘোড়ার পায়ে সোনার নাল তো পরাতেই পারে।’’

তা অবশ্য পারে। তাহলে মানেটা কী দাঁড়াল?”

মানেটা দাঁড়াল, এটা প্রথম থেকেই ছিল একটা সোনার আংটি।’’

তাহলেও একটা কিন্তু আছে।’’

আবার কীসের কিন্তু?”

ছোটবেলা অল্পতেই আমার মাথা গরম যেত। আমার ঠাকমা অনেক কিছুই জানতেন। অনেক কিছুর সঙ্গে এটাও জানতেন, ঘোড়ার নালের আংটি পরলে মাথা ঠান্ডা থাকে। তাই ঠাকমা রথের মেলা থেকে আংটিটা কিনে দিয়েছিলেন। আংটিটা পরার পর থেকে আমার মাথা একেবারে ঠান্ডা ঠান্ডা, কুল কুল।’’

এর মধ্যে তো কোন কিন্তু খুঁজে পেলাম না।’’

কিন্তুটা তো শুরু হল এর পরে। কয়েকদিন ধরে দেখছি, আমার ঠান্ডা ঠান্ডা, কুল কুল মাথাটা কোন কারণ ছাড়াই মাঝে মাঝে তেতে উঠছে।’’

তেতে উঠছে কী রকম?”

সেদিন দেখি, নন্দদের ভাঙা পাঁচিলের উপরে একটা হনুমান উলটো দিকে মুখ করে বসে আছে। আমি বেশ হেঁটে আসছিলাম ঠান্ডা মাথায়। কাছে আসতেই হনুমানটা আমার দিকে তাকাল আর অমনি আমার মাথা গরম হয়ে গেল। দাঁত মুখ খিঁচিয়ে আমি টেনে এক চড় মারলাম হনুমানটার গালে।’’

তারপর?”

তারপর যা হয়, হনুমানটাও আমার গালে টেনে একটা চড় কষিয়ে লম্বা একটা লাফ দিয়ে চড়ে বসল আমগাছের মগডালে আর আমার দিকে তাকিয়ে মুখ ভ্যাংচাতে লাগল।’’

এ তো দেখছি সাংঘাতিক ব্যাপার!”

এ আর কী এমন সাংঘাতিক, সাংঘাতিক ব্যাপারটা ঘটেছে কাল সকালে। বেশ ঠান্ডা মাথায় হেঁটে যাচ্ছিলাম নন্দদের পানা পুকুরের পাড় ধরে। পুকুর পারে একটা কুকুর আপন মনে লেজ নাড়ছিল। কুকুরের লেজ কুকুর নাড়ছে, তাতে কার কী এসে যায় কিন্তু সেই লেজ নাড়া দেখেই আমার মাথা গরম হয়ে গেল। কুকুরের লেজ ধরে মারলাম এক হ্যাঁচকা টান। কুকুরটা ঘ্যাঁক করে এসে পরল আমার ঘাড়ের উপর। ঘাড়ে প্রায় কামড় বসিয়ে দিচ্ছিল, ঠিক তখনই আমার মনে পড়ল হনুমানের লম্বা লাফের কথা। মারলাম এক লম্বা লাফ, গিয়ে পড়লাম নন্দদের পানা পুকুরে। ভাগ্যিস, কুকুর জল দেখলে ভয় পায়। তাই কুকুরটা পুকুরে নামল না কিন্তু গাঁক গাঁক করে ডাকতে শুরু করল। কুকুরে কুকুরে মাসতুত ভাই। ডাক শুনে আরও চারটা কুকুর এসে জড়ো হল পুকুর পাড়ে আর গাঁক গাঁক করে চেঁচাতে লাগল।’’

তারপর?”

কচুরি পানায় গা কুটকুট করছে, নাকেমুখে জল ঢুকছে কিন্তু পাড়ে আর উঠতে পারি না। যেই উঠতে যাই, অমনি পাঁচটা কুকুর তেড়ে আসে ঘেঊ ঘেউ করে। সকাল থেকে সন্ধে পানা পুকুরে নাকানিচোবানি খেতে খেতে অবশেষে মাথাটা ঠান্ডা হল। ঠান্ডা মাথায় ভেবে ভেবে একটা উপায় বার করলাম। আমিও কুকুরের মত ঘেউ ঘেউ করে ডাকতে শুরু করলাম। তারপর দু’হাত দু’পায়ে কুকুরের মত গুটি গুটি করে পাড়ে উঠে এলাম। এবার আর কুকুরের পাল তেড়ে এল না।

তারা হয়ত ভাবল, তাদের কোন জাতভাই পুকুরে পড়ে গিয়েছিল, এতক্ষণে পাড়ে এসে উঠল। সারাদিন মানুষ ভেবে একটা কুকুরকে নাকানিচোবানি খাওয়ানোর জন্য তারা লজ্জায় সুড় সুড় করে পুকুরের পাড় থেকে কেটে পড়ল।

কুকুরেরাও তাহলে লজ্জা পায়।’’

সেটা কুকুরেরাই ভালো বলতে পারবে। তবে আমি আরও অনেক হঠাৎ হঠাৎ মাথা গরম হবার উদাহরণ দিতে পারি। শুনবে নাকি?”

হারু তাড়াতাড়ি বলে উঠল, “না না, তার আর দরকার নেই।’’

পারুও চটপট বলে উঠল, “যা বোঝার, আমরা বেশ বুঝে গেছি।’’ 

বিচিত্রবাবু শুধোল, “বলতো বাপু, কী বুঝেছ?”

হারু বলল, “মাঝে মাঝেই মাথা তেতে উঠছে।’’

কেন তেতে উঠছে?”

সেটা তো ঠিক ধরা যাচ্ছে না।’’

আমিও প্রথমে ঠিক ধরতে পারিনি। অবশেষে একদিন খেয়াল করলাম, আমার বাম হাতের কড়ে আঙুলটা চকচক করছে।’’

আঙুল আবার চকচক করে নাকি? আঙুলে সোনার আংটি থাকলে, সেটা চকচক করতে পারে।’’

কী সব্বোনাশ! আমার বাম হাতের কড়ে আঙুলের ঘোড়ার নালের আংটিটা গেল কোথায়? লোহার বদলে এ তো দেখছি, একটা সোনার আংটি!”

এ নির্ঘাত পরশপাথর। পরশপাথরের ছোঁয়ায় লোহার আংটি সোনা হয়ে গেছে।’’

তা হবে হয়তো।’’

পাথরটা আপনি গুছিয়ে রেখেছেন তো, বিচিত্রবাবু?”

সেটা নিশ্চই চোখে পড়ার মত কিছু ছিল না। তাই কখন পেলাম আর কখন যে হারালাম, কিছুই খেয়াল করিনি। কখন যে লোহার আংটি সোনার হয়ে গেল, তাও না।’’

চলুন বিচিত্রবাবু, আমরা সবাই মিলে ওটাকে খুঁজি। ওটা পেলে আমি টকাস করে ঠেকাবো আর বাবার মাটি কাটার কোদাল, ঘাস কাটার দা, গাছ কাটার কাটারি, সব সোনার হয়ে যাবে। বাবা খুব খুশি হবেন।’’

ওটা পেলে আমিও টকাস করে ঠেকাবো রান্না করার কড়াই, ব্যান সাঁতলানোর খুন্তি, মাছ কাটার বঁটি, সব সোনার হয়ে যাবে। মাও খুব খুশি হবেন।’’

হারু বলল, “সেইসঙ্গে বাবার রিক্সাটাও।’’

পারু প্রবলভাবে ঘাড় নেড়ে বলল, “রিক্সাটাকে সোনা করা একেবারেই ঠিক হবে না।’’

কেন, ঠিক হবে না কেন?”

দেশে এখন আর রাজারাজড়া নেই। সাধারণ লোক কি সোনার রিক্সায় চড়তে চাইবে?” 

পারুর কথাটা ফেলনা নয়। ঘাড় নাড়ল হারু। এখন তার মাথায় একটা অন্য ফিকির খেলছে। সে বলল, “আচ্ছা বিচিত্রবাবু, এই জঞ্জালের পাহাড়ে তো অনেক লোহালক্কড়ের টুকরো ছড়িয়ে আছে। টকাস টকাস টকাস করে পরশ পাথর ঠেকিয়ে লোহালক্কড়ের টুকরোগুলোকে সোনা করে নিলে কেমন হয়?”

সব্বোনাশ হবে। সোনার লোভে দলে দলে চোর, ডাকাত, গুন্ডা, বদমাশ, মস্তান, পালোয়ান এখানে এসে ভিড় করবে। তখন তারা ঘাড়ধাক্কা দিয়ে আমাদেরকেই এখান থেকে তাড়িয়ে দেবে।’’

হারু ও পারু বলল, “তা অবশ্য ঠিক।’’

 

এতক্ষন বিচিত্রবাবু একাই জঞ্জালের স্তুপ নেড়েচেড়ে খোঁজাখুঁজি করছিলেন, এবার হাত মেলাল হারু ও পারু। খুঁজতে খুঁজতে সকাল গড়িয়ে দুপুর, দুপুর গড়িয়ে বিকেল। হারু ও পারু তেমন কিছুই খুঁজে পেল না, যেটাকে পরশ পাথর বলে মনে হতে পারে।

হারু ও পারু যখন হতাশ হয়ে জঞ্জালের পাহাড় নাড়াচাড়া বন্ধ করে বাড়ি ফেরার কথা ভাবছে, তখন বিচিত্রবাবু চেঁচিয়ে উঠলেন, “পেয়েছি, পেয়েছি!”

হারু ও পারু হুমড়ি খেয়ে পড়ল, “কী পেয়েছেন, কী পেয়েছেন, বিচিত্রবাবু?”

হাতের কাছে যা পাই, কুড়োই, ঠেকাই আর ছুঁড়ে ফেলি। কুড়োই, ঠেকাই আর ছুঁড়ে ফেলি। এইভাবে কুড়োতে কুড়োতে, ঠেকাতে ঠেকাতে আর ছুঁড়ে ফেলতে ফেলতে, এখন দেখছি, পেয়ে গেছি।’’

উৎসাহে টগবগ করে ফুটছে হারু ও পারু, “কই দেখি, কই দেখি, দেখি বিচিত্রবাবু।’’

বিচিত্রবাবু বাম হাতের কড়ে আঙুলটা তুলে ধরলেন চোখের সামনে। বিস্ময়ে হারু ও পারুর চোখ গোল গোল, “এ তো দেখছি, একটা লোহার আংটি!”

ঘোড়ার নালের, আমার ঠাকমা কিনে দিয়েছিলেন রথের মেলা থেকে মাথা ঠান্ডা রাখার জন্য।’’

আর পরশ পাথর?”    

সে তো ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছি।’’

কেন, কেন?”

অমন জিনিস কি কেউ কাছে রাখে? লোভে পড়ে আবার যদি ঠেকিয়ে ফেলি, আমার ঠাকমার দেওয়া ঘোড়ার নালের আংটি তো আবার সোনা হয়ে যাবে। আমার ঠান্ডা ঠান্ডা, কুল কুল মাথা আবার তেতে উঠবে।’’

হারু ও পারু একসঙ্গে মাথা নাড়ল, “তা অবশ্য ঠিক!”