গল্প - ১ । ভাদ্র ১৪৩১






 ভল্লুক রহস্য 








তরুণকুমার

সরখেল

পুরুলিয়া, পশ্চিম বঙ্গ



 

বুগাই শবর যখন মোরগ লড়াইয়ের মাঠে পৌঁছাল তখন বেলা গড়িয়ে গেছে। মাঠে এসে সে লড়াইয়ের জোড় খুঁজতে লাগল। বুগাই-এর মোরগ বেশ তাগড়া। এর আগে অনেক মোরগকে সে লড়াইয়ের মাঠে কুপোকাত করে দিয়েছে। তাই খুব সহজে তার মোরগের জোড় পাওয়া গেলনা।


নিতাই তার মোরগ নিয়ে এসেছে অনেক দূর থেকে। তার মোরগটাও বেশ তাগড়া। নিতাই সেটাকে মাঠে নামাতেই বুগাই-এর মোরগ তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। এরপর দুটোকে লড়াইয়ের মাঠে নামিয়ে দেওয়া হল। নিমেষের মধ্যেই বুগাই-এর মোরগ ছুরির ঘায়ে মারা পড়ল। নিতাই জেতা মোরগ সাইকেলে ঝুলিয়ে ঘরের পথে রওনা হল।

সবে তখন সন্ধ্যা হয়েছে। শীতের রাত। রাস্তা প্রায় নির্জন। হঠাৎ রাস্তার উলটো দিক থেকে একটা  ভল্লুক দৌড়ে এসে আক্রমণ করল নিতাইকে। কুয়াশার রাত্রে নিতাই কিছুই বুঝতে পারল না। সে পড়িমরি করে ছুট লাগাল। 

তারক ব্যাপারটা ঠিক বুঝতে পারল না। একটা লোক সাইকেলে মোরগ ঝুলিয়ে ফিরছিল। হঠাৎ তাকে দেখে অমনভাবে পালিয়ে গেল কেন? তারপর সে নিজের দিকে তাকিয়ে আসল ঘটনাটা বুঝতে পারল। তারক ভল্লুকের এই জবড়জং পোশাকটা পরে রাস্তার ওপাশে যে মাঠ রয়েছে সেখানে ছুটে যাচ্ছিল। ওখানে তার বন্ধু রাখহরি তার জন্য অপেক্ষা করে আছে। রাখহরি ছৌ-নাচের আসরে ময়ূর সাজে। কার্তিককে পিঠে চাপিয়ে অসুরের সঙ্গে যুদ্ধ করায়। কার্তিক যে সাজে সে শুধু বড় মুখোশখানা নিয়ে মাথা নাড়ে আর হাতে তীর ধনুক নাড়াচাড়া করে। আসল লড়াইটা তো করে রাখহরি। তাই তাকে নিয়মিত যুদ্ধটা অভ্যাস করে যেতে হয়। এটা তার গুরুর গুরু ধুঁন্দা মাহাতোর নির্দেশ।

তারক ছেলেটি খুব ডাকাবুকো।  গোলামারা হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সে। পড়াশোনাতেও ভাল। তবে তারক ভালো উলফা দিতে পারে বলে ‘বালিগাড়া ছৌনৃত্য পার্টি’ তাকে দলে নিয়ে নিয়েছে। বর্তমানে ধনঞ্জয় মাহাতোর ছেলে দেবেন মাহাতোর দলে সে আসরে উলফা দেয় আর দর্শকদের হাততালি কুড়োয়। 

ধনঞ্জয় মাহাতো আসরে বসে তারকের বীরবিক্রম দেখে অবাক হয়ে যায়। একদিন তারককে ডেকে বলল, “ছৌ-লাচ হল দুই পা, দুই হাত মাথা আর বুক এই ছয়টি অঙ্গের সফল সঞ্চালনা। এটা ভালো ভাবে রপ্ত করে নিলেই ছৌ-এর বীর ধর্ম রক্ষিত হয়।” 

তবে তারক অতশত বোঝে না। সে দেখে দেখেই এসব শিখে নিয়েছে। এখন  উলফা দেওয়া তার কাছে জল ভাত। সেই সাত আট বছর থেকেই সে কাঁসাই নদীর বালিতে উলফা দিয়ে আসছে।  আসরে নেমে ধামসা আর সানাই-এর সুর শুনতেই তার শরীরটা যেন তুলোর মতো হালকা হয়ে যায়। তখন কে যেন তাকে দিয়ে একটানা দশ-পনেরোটা উলফা (শূন্যে ডিগবাজি) করিয়ে নেয়। আর এই উলফাবাজির কসরতের জন্যই সে  মা-বাবার অভাবের সংসারে  কিছু টাকা উপার্জন করে বাবার হাতে তুলে দেয়।

মাঠের একদিকে কিছুটা অংশ জুড়ে বালি ঢেলে তারা আখড়ার আসর করে নিয়েছে। সেখানে তারক ভল্লুকের পোশাক পরেই ময়ূরের উপর চেপে বসে। আর মাঝে মধ্যে শূন্যে উলফা দিয়ে বালির উপর এসে পড়ে। সামনের মাস থেকেই ছৌ-নৃত্যের সিজন শুরু হবে বলে তারা এখন নিয়মিত আখড়ায় গিয়ে কসরত করে।

আজকেও সে হন হন করে সেখানে যাচ্ছিল। কিন্তু তাকে সত্যিকারের ভল্লুক ভেবে লোকটা মোরগ ফেলেই পালিয়ে গেল। এখন কী করা যায়? তারক দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবতে লাগল। আচ্ছা ভল্লুক  কখনো ওভাবে দু-পা দিয়ে দৌড়াতে পারে? লোকটা সেটা বুঝতে পারল না? 

বাধ্য হয়ে তারক ভল্লুকের পোশাকটা খুলে ফেলল। তারপর পড়ে থাকা সাইকেলটা নিয়ে লোকটা যেদিকে ছুটে পালিয়ে ছিল সেই দিকে সাইকেল ছুটিয়ে দিল। কিছুদূর গিয়ে রাস্তার পাশে একটা মহুল গাছের নীচে দেখা গেল লোকটি ভয়ে জড়সড় হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। 

তারককে দেখতে পেয়েই লোকটি কাছে এসে বলল, “যাক ভল্লুক  তাহলে মুরগিটাকে খায় নি।”

তারক বলল, “খাবে কী করে? আমি এসেই তো ওটাকে তাড়ালাম। ভল্লুকটা  এতক্ষণে কাঁসাই নদীর ধারে হাওয়া খেতে চলে গেছে। কোন ভয় নেই।”

নিতাই-এর তবু ভয় যায় না। একবার তারকের দিকে তাকাল সে। এই ছোট্ট ছেলেটা অতবড় কালো ভল্লুকটাকে তাড়িয়ে দিল। তার বিশ্বাস হল না। 

তারক সেটা বুঝতে পেরেই শূন্যে উঠে হাওয়ার উপর একটা উলফা দিয়ে মাটিতে সটান নেমে পড়ল। যেন তার দু-পায়ে স্প্রিং দেওয়া আছে। উলফা শেষ করেই তারক নিতাইকে বলল, “এভাবেই একটা উলফা দিয়ে ভল্লুকটাকে তাড়ালাম। তাইতো মোরগটা বেঁচে গেল।”

নিতাই আর কোন কথা না বলে আধো অন্ধকারে হারিয়ে গেল। তারক মহুল গাছের নীচে দাঁড়িয়ে থাকল বেশ কিছুক্ষণ। তারপর ভল্লুকের পোশাকটা হাতে নিয়ে ময়ূরের সন্ধানে চলতে শুরু করল। 

তারকের চেহারা দেখে তার বন্ধুরা তাকে ফড়িং বলে ডাকে। ইস্কুলে বন্ধুদের কাছে তারকের বেশ জনপ্রিয়তা আছে। লিকপিকে চেহারা হলে হবে কী, তারকের গায়ে কিন্তু বেশ জোর ।

বাংলার শিক্ষক নটবরবাবু পূর্ববঙ্গের লোক। কথা বলার সময় তিনি মাঝেমধ্যেই সেখানকার ভাষা ব্যবহার করেন। নটবরবাবু আগে মানভূম ভিক্টোরিয়ার শিক্ষক ছিলেন কিন্তু বর্তমানে বদলী হয়ে তারকদের ইস্কুলে এসেছেন। মাছ খেতে নটবরবাবু খুব ভালোবাসেন। তবে এই কাঁকুরে মাটির দেশে তেমন ভালো মাছ পাবেন কোথায়? 

তিনি অফিসঘরের বাইরে এসে মাধবকে ডেকে বললেন, “ভালো দেইখ্যা দু-তিন কেজির একখান রুই মাছ হাট থাইক্যা নিয়ে আইসব্যা, দেরি না হয় যেন।” 

মাধব বলল, “সে আমি বিকেলে হাট থেকে নিয়ে আসব। ওইসময় হাটে টাটকা রুই পাওয়া যায়। আপনি যখন স্কুল থেকে বাড়ি ফিরবেন তখন আপনার সাইকেলে ঝুলিয়ে দেব।”

আসলে মাছ-প্রিয় নটবরবাবু এর আগেও বেশ কয়েকবার এইভাবে সাইকেলে মাছ ঝুলিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

অভি তারকদের খবরটা দিল। “আজ মাধবদা হাট থেকে তিনকেজির রুই মাছ এনে নটবরবাবুকে দেবেন। চল আজ নটবরবাবুর সাধের মাছ দিয়ে ফিস্টি করি।” অভির দুষ্টু বুদ্ধি উঁকি মেরে যায়। 

তারক ডাকাবুকো হলেও এসব কাজে থাকতে চায় না। নটবরবাবু ক্লাসে ছাত্রদের বেশ শাসনে রাখেন। তাঁর একটা শাস্তি হল ‘রাম-গাঁট্টা’ দেওয়া। ‘রাম-গাঁট্টা’ একবার যে খায় সে আর ভোলে না। তারক অবশ্য ‘রাম-গাঁট্টা’ খায়নি। তবে খেতেও চায় না। তাই সে অভিদের কথায় কান দিল না। 

কিন্তু অভি যখন তাকে এই বলে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল যে, “সে কিছুতেই নটবর বাবুর সাইকেল থেকে মাছ আনতে পারবে না” তখন তারক আর স্থির থাকতে পারল না। অভি তো আর জানে না, নিতাই কীভাবে জেতা মোরগ ফেলে ভালুক-তারককে দেখে ভয়ে পালিয়েছিল। সেটা যদি সে জানতো তাহলে আর চ্যালেঞ্জ করতে যেত না। 

মাধব হাতের কাজ সেরে যখন মাছ আনতে হাটে চলল, তারকও তখন পাঁই পাঁই করে ছুটল ভল্লুকের মুখোশ আর লোমশ-কালো পোশাকটা আনতে।

না, কেউ ভূত সেজে এসে ভয় দেখিয়ে নটবরবাবুর কাছ থেকে মাছ ছিনিয়ে নেয়নি। কিংবা নটবরবাবুর বাড়ি যাবার রাস্তায় গাছের গুড়ি ফেলে পথ আটকে কায়দা করে মাছটা সরিয়েও ফেলেনি। 

তিনি কাঁকর বিছানো মোরাম রাস্তা ধরে বেশ খোশমেজাজেই সাইকেল চালাচ্ছিলেন আর মাঝে মধ্যেই হ্যান্ডেলের ডানদিকে ঝোলানো মাছটার দিকে তাকাচ্ছিলেন। ভাবছিলেন, “আর দেরি নেই। তাজা মাছটা ঘরে নিয়ে গিয়েই গিন্নিকে হেঁকে বলবেন, রাত্রেই দু-চার পিস ভেজে দিতে। কেননা সকালে এ মাছের স্বাদ অনেকটাই কমে যাবে।”

ঠিক তখনই পলাশ ঝোপের পাশ থেকে ভল্লুকটা সবেগে ধেয়ে এলো। নটবরবাবু কোনদিন এভাবে রাস্তার মাঝে ভল্লুক দেখেননি। তিনি বড় হয়েছেন জলা-জমির দেশে। সেখানে মাছ-সাপ-কচ্ছপ-গেঁড়ি-গুগলি এসব দেখেছেন বিস্তর। কিন্তু এরকম লাফ দেওয়া জ্যান্ত ভল্লুক দেখে তিনি ভয়ানক ভড়কে গেলেন।

তিনি, “মইরা গেলাম, মইরা গেলাম, ভল্লুকে খাইলোরে” বলে সাইকেল সমেত মাটিতে গড়াগড়ি খেতে লাগলেন। উঠে যে দৌড়ে পালিয়ে যাবেন সে সাহসটাও পেলেন না। 

এদিকে ভল্লুক ভাবছে, “নটবরবাবুর কাছে যাওয়াটা কি ঠিক হবে ? যদি চিনে ফেলেন? তাহলে কিন্তু রাম-গাঁট্টা!” 

তখনো অন্ধকার হয়নি, পথ-ঘাট বেশ দেখা যাচ্ছে। তাই ভল্লুক সাইকেল থেকে মাছটা কেড়ে নিতেও পারছে না। আর এদিকে নটবরবাবুর চিৎকারে কেউ এসে পড়লেও মুশকিল। বাধ্য হয়েই ভল্লুক এবার তার খেলাটা শুরু করল। একটা উঁচু মতো জায়গায় গিয়ে পর পর দুটো উলফা দিল এবং নটবরবাবুকে পালাবার জন্য কিছুটা সুযোগও করে দিল। 

কিন্তু মাছ-পাগল নটবরবাবু মাছ ছেড়ে পালাবেন না। হ্যান্ডেল থেকে মাছটা নিয়েই পিছনদিকে দৌড়াতে শুরু করলেন। ভল্লুক দেখল, আচ্ছা বিপদ। এবার নটবরবাবুর মুখোমুখো হতেই হবে। তা না হলে তার মাছটা হাতছাড়া হবে।

ভল্লুকটা এবার চার পা ছেড়ে দু-পায়ে লাফাতে লাফাতে নটবারবাবুকে তাড়া করে এল। তারপর কাছে এসে হঠাৎ  সাঁই সাঁই করে শূন্যে তিনটে ডিগবাজি খেয়ে ঘোঁৎ ঘোঁৎ করে ভয় দেখাল। 

আর মাছটা আগলে রাখতে পারলেন না নটবরবাবু। তিনকেজির রুই মাছ ভালুকের দিকে ছুড়ে দিয়ে বললেন, “এতই যদি মাছ পছন্দ তবে পুকুরে শালুক না খেয়ে মাছ ধরেই তো খেতে পারিস?”

ভল্লুক এতবড় মাছটাকে মুখ দিয়ে ধরবে কী করে? সে নটবরবাবুকে অবাক করে দিয়ে দু-হাত দিয়ে মাছটাকে ধরে দু-পায়ে দৌড়ালো পলাশ জঙ্গলের দিকে। 

ভল্লুকটা অদৃশ্য হয়ে যেতেই নটবরবাবুর ভয় অনেকটা কমে গেল। তিনি পলায়মান ভল্লুকটার পথের দিকে চেয়ে বললেন, “বাপের জন্মে এইটার মতো ভল্লুক দেখি নাই। ব্যাটার সব কাজ কারবার মানুষকেও হার মানায়।”

ইস্কুল মাঠের একদিকে একটি বড় মঞ্চ সাজানো হয়েছে। মঞ্চের সামনের সারিতে রয়েছে হেডস্যার সহ অন্যান্য শিক্ষকদের বসবার চেয়ার। সেখানে বসে রয়েছেন নটবরবাবু সহ অন্যান্যরা। পেছনে ছাত্ররা। 

ইস্কুলের প্রতিষ্ঠা-দিবসে প্রতি বছরের মতো এবছরও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম এবং প্রধান আকর্ষণ হল আজকের এই  ‘বালিগাড়া ছৌ-নৃত্য দল’-এর বিশেষ অনুষ্ঠান। ছৌ-নাচের মূল বিষয় হল ‘পরিবেশ রক্ষা’। 

দেবেন মাহাতোর দলে যারা ছৌ-নাচের আসর মাত করে তাদের বয়স বেশি নয়। ছিপছিপে গড়নের ছেলেগুলোর জন্য বেশ বড়-সড় মঞ্চের দরকার হয়। আর পুরো মঞ্চটাই জমজমাট হয়ে ওঠে ছেলেগুলোর উলফা-বাজিতে। 

আজকের এই ‘পরিবেশ রক্ষা’ পালায় দেখানো হবে  গ্রামের একটি ডাকাবুকো ছেলের চেষ্টায় এবং উপস্থিত বুদ্ধির জোরে আস্ত একটা চন্দন-বন কাঠ-চোরাকারবারিদের হাত থেকে কীভাবে রক্ষা পেল। 

রাত্রি বেলায় বনে লরি নিয়ে চন্দন গাছ কাটার তোড়জোড় করছিল চোরের দল। এমন সময় দূরে দেখা গেল একটা কালো জন্তু থপথপিয়ে তাদের দিকেই এগিয়ে আসছে। কাছে এসে পড়তেই চোরেরা দেখল সেটা একটা লোমশ-ভল্লুক। চোরের দল নিজেদের বাঁচাতে করাত ফেলে পিছিয়ে গেল। ভল্লুক আসর-জুড়ে নিজের খেলা শুরু করল এবার। 

“জবড়জং পোশাক পরে অত উঁচুতে লাফাচ্ছে কীভাবে ছেলেটা?” নটবরবাবু অবাক হয়ে ভাবছেন। ভল্লুক এবার শূন্যে ডিগবাজি দিয়ে খেলা দেখানো শুরু করতেই চোরেরা ভয় পেয়ে একে একে গ্রীণরুমের দিকে দৌড়াল।

আর ঠিক তখনই নটবরবাবুর এত দিনের না মেলা অঙ্কটা জলের মতো মিলে গেল। ছাত্র-শিক্ষকরা যখন তারকের উলফা-বাজি দেখে হাততালি দিয়ে খেলার মাঠ মুখরিত করে দিয়েছে তখনই নটবরবাবু নিঃশব্দে চেয়ার ছেড়ে উঠে পড়লেন।

প্রধান শিক্ষক নিখিলবাবু গণেশবাবুকে ডেকে বললেন, “নটবরবাবু আবার স্টেজে উঠে গেলেন কেন? নীচে বসেই তো হাততালি দিয়ে ছেলেটাকে বাহবা জানানো যায়!”

কিন্তু নটবরবাবু তো আর বাহবা জানাতে স্টেজে আসেননি। তিনি সোজা গিয়ে ভল্লুকটাকে জাপটে ধরে ফেললেন। তারপর টান মেরে মুখের মুখোশটা খুলে তারকের মাথায় পরপর চারটে ‘রাম-গাঁট্টা’ উপহার দিলেন। আর বিড়-বিড় করতে লাগলেন, “আমার মাছ-চুরি করে খাওয়ন, তোর এত বড় সাহস!”

মুখোশ হাতে তারক স্টেজ জুড়ে লাফা-ঝাঁপা করছে আর নটবর স্যার তাকে তাড়া করে চলেছেন। তাই দেখে পরিচালক দেবেন মাহাতো সটান আসরে ঢুকে তারককে রক্ষা করল বলেই নটবরবাবুর ‘রাম-গাঁট্টা’ গুলো বেঁচে গেল। না হলে সেগুলো সবই তিনি আজ তারকের মাথায় উজাড় করে দিতেন!