সাক্ষাৎকার । ফাল্গুন ১৪৩১

সা ক্ষা ৎ কা র   নি য়ে ছে ন



নন্দিতা দত্ত
আগরতলা, ত্রিপুরা



 

শ খ -
ভ্রমণ, বই পড়া এবং নিজস্ব কৃষ্টি ও সংস্কৃতি বিষয়ে গবেষণামূলক প্রবন্ধ লেখা। কবিতা লেখা শৈশবকাল থেকে।সাহিত্য অকাডেমি আয়োজিত কবি সম্মেলনে ত্রিপুরা সহ মধ্যপ্রদেশের ভূপাল শহরে, আসাম, পশ্চিম বঙ্গ, রাজধানী দিল্লি সহ ভারতের বিভিন্ন স্থানে অংশগ্রহণ করেছেন

 

প্রশ্ন - স্কুলে প্রথম ক্লাস শুরু হওয়ার আগে - (ষষ্ঠ শ্রেনী) ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে একটা ওরিয়েন্টেশন বা জীবনের উদ্দেশ্য কি এ নিয়ে তাদের সাথে কথা বলা কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং আপনি এর প্রয়োজনীয়তা কিভাবে দেখেন? 

উত্তর - জীবনের উদ্দেশ্য কি তার অর্থ হয়তো এতটা গভীর ভাবে বুঝেনা ওরা এইটুকু বয়সে। তাই তাদেরকে জীবনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে একটা সম্যক ধারণা দেওয়ার প্রয়োজন আছে। তাদের সাব-কনশাস স্টেজে ইনপুট করা থাকলে পরবর্তীতে তাদের ক্যারিয়ার তৈরির কাজে ম্যচুউর কনসেপ্ট হিসাবে কাজ করবে। জীবনের লক্ষ্য নির্বাচনে সহায়তা করবে। 




 সঙ্গীতা সিংহ ২০২৩-২৪ শিক্ষা বর্ষে বিশালগড় ব্লকের মধ্যে, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর অর্জন করে।

প্রশ্ন - কো-কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটি একজন ছাত্র ও শিক্ষকের মধ্যে বন্ডিং কি বাড়ায়? কিভাবে?

উত্তর - কো-কারিকুলার অ্যাকটিভিটিস শিক্ষার্থীদের সার্বিক উন্নয়নে সহায়তা করে। বিভিন্ন  কর্মকান্ডে শিক্ষক - শিক্ষার্থীর মধ্যে একটা ফ্রী এন্ড ফ্রেঙ্ক পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এতে অবশ্যই উভয়ের মধ্যে আত্মিক সম্পর্ক বা বন্ডিং বাডায়। 




খোখো চ্যাম্পিয়ন।

প্রশ্ন - একজন শিক্ষার্থীকে পড়াশুনার পাশাপাশি স্কুল (শিক্ষক শিক্ষিকা) ভালো মানুষ হতে কিভাবে সাহায্য করেন?

উত্তর - পারস্পরিক দায়বদ্ধতা সম্পর্কের অন্যতম চাবিকাঠি। কেবলমাত্র পাঠ্যপুস্তক মুখস্থ করে ভালো মানুষ হওয়া যায় না। মূল্যবোধের শিক্ষা, প্রাক্ষোভিক শিক্ষা, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা উপলব্ধি করতে পারার শিক্ষা, পরিবারের, সমাজের, দেশের সাহায্যে এগিয়ে আসার শিক্ষা একজন ভালো মানুষ তৈরি করে। একজন দায়িত্ববান শিক্ষক কারিগর হিসাবে ভূমিকা নিতে পারেন। 




নাটক প্রতিযোগিতা

প্রশ্ন - একাদশ শ্রেনীতে বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে অভিভাবক শিক্ষক শিক্ষার্থীর সমন্বয় কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

উত্তর -  বিষয় নির্বাচন বা স্ট্রিম নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যই শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে সমন্বয় থাকাটা জরুরী। প্রয়োজনে শিক্ষকদের কাছ থেকেও অভিজ্ঞতা নেওয়া যেতে পারে। কারণ,  বিষয় নিয়ে শিক্ষার্থীর যেসব বিষয়গুলো পড়ার ইন্টারেস্ট / আগ্রহ আছে তা গুরুত্ব সহকারে দেখা দরকার। অপরপক্ষে, অভিভাবক কিংবা বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বুঝতে পারবেন শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত বিষয়সমূহের নির্বাচন সঠিক হয়েছে কিনা প্রতিভা অনুযায়ী। 




অঙ্কন প্রতিযোগিতা

প্রশ্ন - অতিরিক্ত চাপ (জয়েন্ট পেতে হবে, ভালো কলেজে চান্স পেতে হবে) এড়াতে ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকদের কি পরামর্শ দেবেন?

উত্তর - ছাত্রদের উপর অতিরিক্ত চাপ দেওয়া মানে হীতে বিপরীত। এক - আধা নম্বরের ব্যবধানের পজিশনের পেছনে না দৌড়ে শিক্ষার্থীদের বিষয়বস্তুর উপর পূর্ণ ধারণা নেওয়ার উপর গুরুত্ব দেওয়া। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো - শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে দেওয়া। 


 প্লাস্টিকের পুনর্ব্যবহার

প্রশ্ন - বিদ্যালয় প্রধান হিসেবে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় আপনার সহকর্মী দের আপনি কিভাবে নজর দিতে বলেন?

উত্তর - শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য পরস্পরের উপর নির্ভরশীল।  শিক্ষার্থীর শারীরিক সুস্বাস্থ্য নিয়ে যেভাবে সচেতন থাকতে হবে ঠিক সেভাবে শিক্ষার্থীদের মানসিক সুস্বাস্থ্যের দিকে সচেতন থাকতে হবে অবিভাবকের এবং শিক্ষকদের। মনে রাখতে হবে, ‘‘prevention is better than cure’’. শিক্ষককে শিক্ষার্থীদের কাছে হতে হবে ‘‘Friend, Philosopher and Guide’’. 



স্কুল লাইব্রেরি, পড়ার অভ্যাস বাড়ায়। 

প্রশ্ন - বিফলতা সাফল্যের পথ দেখায় - ছাত্রছাত্রীদের এই  বিষয়টা বোঝানো কতটা দরকার?

উত্তর -  কথায় আছে “Failure is the piller of success’’. অর্থাৎ  সফলতার পেছনে অসফলতার গল্প আছে। অর্থাৎ কখনো ব্যর্থ হলে / অসফল হলে ভেঙ্গে পরার কারণ নেই। কি কারণে, কোন ত্রুটির জন্য অসফলতা / ব্যর্থতা হয়েছে তার নির্ণয় করে পুনরায় চেষ্টা করা। তবে, সফলতা বিফলতা ছাড়াও সম্ভব, যদি চেষ্টা থাকে। 

প্রশ্ন - একজন সৎ ছাত্র ভবিষ্যতের সৎ নাগরিক - সৎ মানুষ হওয়ার পাঠ কাগজে কলমে নয় একজন মানুষ হিসেবে কিভাবে উদাহরণ হয়ে ওঠা সম্ভব?

উত্তর - শিক্ষার্থীদের গতানুগতিক পাঠক্রমের শিক্ষা ছাড়াও মূল্যবোধের শিক্ষার প্রয়োজন আছে। যা তাদের জীবন্ত রোবট মানব থেকে আলাদা করে। শিক্ষার্থীদের  মানবিক, সামাজিক দায়বদ্ধতার মূল্যবোধ একজন সৎ - সুনাগরিক হিসাবে গড়ে তোলে।