স্বাগতা ভট্টাচার্য

                                                                                                                                                                                                                                 ছবি - রাহুল মজুমদার

  ছড়া সম্রাট ভবানীপ্রসাদ              মজুমদার









স্বাগতা ভট্টাচার্য





 

ছড়া সম্রাট ভবানীপ্রসাদ মজুমদার এমন এক সাহিত্যিকের নাম। যাঁর ছড়া পড়তে শুধু ছোটোরা নয় কিশোর, প্রাপ্তবয়স্ক সকলেই পাঠ করতে গিয়ে এক অন্য ভালোলাগা অনুভব করেন

১৯৫৩ সালের ৯ই এপ্রিল হাওড়া জেলার দক্ষিণ শানপুর গ্রামে মা নিরুপমা দেবীর কোল আলো করে আসেন ভবানীপ্রসাদ মজুমদার। বাবা নারায়ণচন্দ্র মজুমদারের মুখেও ফুটেছিল হাসি পুত্রের মুখদর্শনে

তাঁর কর্মজীবনে প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকতার সুবাদে ছোটোদের নিয়ে লেখার অনেক খোরাক পেয়ে যান তিনি। পরবর্তীকালে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তাঁর লেখা প্রায় কুড়ি হাজারের বেশি ছড়া সমৃদ্ধ করেছে বাংলার সাহিত্য ভাণ্ডারকে।রবীন্দ্রসঙ্গীত’, ‘পদ্মাবতী’, ‘রশ্মি রঙ্গিননগরী’, ‘মধুকর্ণিকা’, ‘জন্মভূমিইত্যাদির মতো কাব্যগ্রন্থ গেঁথে থাকে পাঠকের মনের উঠোনে। তাঁর লেখাস্বাধীনতার মানেকবিতাটি হাজারো প্রশ্নচিহ্ন এঁকে দিয়েছে সকলের মনে। যেমন, স্বাধীনতা কেমন দেখতে? নাকি পাখির মতো ডানাওয়ালা কোনও প্রাণী! তাঁর সময়োপযোগী লেখাদুর্গার দুর্গতি’  কবিতায় দুর্গা ঠাকুরের মূর্তি গড়াকে কেন্দ্র করে পুজো কমিটিগুলি যে ইঁদুর-দৌড়ের প্রতিযোগিতায় নেমেছে, তার কথা স্পষ্ট উল্লেখ করেছেন। খড়, মাটি, রঙে গড়া সাবেকি একচালার প্রতিমা ছেড়ে চাল, ডাল, প্লাস্টিক ইত্যাদি দিয়ে আকর্ষণীয় প্রতিমা ও থিম পুজো করার যে রেওয়াজ শুরু হয়েছে সেই দুর্গতির কথাই বলেছেন এই কবিতায়। আবারবাংলাটা ঠিক আসে নাকবিতার মাধ্যমে সেইসব বাঙালি বাবা-মায়ের গালে ঠাঁটিয়ে চড় মেরেছেন যাঁরা বাংলা মিডিয়ামে ছেলেমেয়েদের কোনও ভবিষ্যৎ খুঁজে পান না। অন্যদিকেমিঠে কড়া শ্রেষ্ঠ ছড়াকাব্যগ্রন্থেমামার বুদ্ধিদারুণ মজাদার ও ব্যঙ্গাত্মক। আবারখোকার উক্তি জবর যুক্তিকবিতায় মা ও খোকার কথোপকথনের মাধ্যমে শপিং মল, রিডাকশন সেল, চড়কমেলার যে বিষয়গুলি উঠে এসেছে, তা অত্যন্ত সময়োপযোগী। তাঁর লেখায় বার বার সমসাময়িক যে সমাজ চিত্র ফুটে উঠেছে তাতে আমরা অনায়াসেই বলতে পারি, সাহিত্য সমাজেরই দর্পণ

বর্তমানে বয়সজনিত কারণে এবং পায়ের সমস্যার জন্য তেমন বাইরে যেতে না পারলেও থেমে থাকেনি তাঁর সাহিত্যচর্চা

  

<