....
....
কিশোর বার্তা-র এই গল্পটির ছাপা সংখ্যাটি রেজিঃ ডাকে পেতে -
| | না, বিশ্ব বিখ্যাত এই শিশু কিশোররা আদবে কোন
ঐতিহাসিক চরিত্র নয়,আবার ঐতিহাসিক
চরিত্রও বটে। এরা কোন রক্ত মাংসের মানুষ নয়, তবে মনের মানুষ অবশ্যই। এরা চলাফেরা করে,
খায় দায়, গান গায়, আবার মজার মজার ঘটনা ঘটায়। এদের বুদ্ধি আছে,
বিবেক আছে, আছে অকল্পনীয় অভাবনীয় শক্তি। যে শক্তির বলে
তারা অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলে। না, কাজ নেই তোমাদের
ধাঁধায় ফেলে। বলে ফেলি আসল কথাটা। তোমরা তো হিম্যান, ব্যাডম্যান, স্পাইডারম্যান, টারজান, সুপারম্যান প্রভৃতি সুপারহিরোদের কথা, তাদের কীর্তিকলাপ অনেক শুনেছ, জেনেছ,পড়েছ।
কিন্তু আজ যাদের কথা নিয়ে লিখছি, তারাও বিশ্ব বিখ্যাত সব শিশু কিশোর চরিত্র।নাটক,নভেল, কমিকস প্রভৃতি সাহিত্যের পাতায় তারা আজও সগর্বে বিচরণ করছে। তাদের কথা শুনতে
কার না ইচ্ছে হয়?তোমাদের প্রিয়
কিশোরবার্তার সম্পাদক আমাকেই ভার দিয়েছে তা লিখতে। তোমরা পড়ে দেখো, তাদের চিনতে পারো কিনা?
' হা ই ডি '
প্রথমে বলি 'হাইডি'র কথা। হাইডি কে? হাইডি হলো একটা
ছোট্ট মেয়ে। দেখতে সে খুব সুন্দর। মাথায় তার ঘন কালো চুল। তবে সে চুল ঘাড়
ছাড়িয়ে তা পিঠে পড়েনি। অনাথ এই মেয়েটির আপনজন বলতে কেউ নেই। আছে মাত্র একজন।
তিনি হলেন তার দাদু। আর আছে তার একটা প্রিয় ভেড়া। তাদের নিয়ে হেসে খেলে হাইডির
দিন কেটে যায়। কি বলছ? হাইডির বাড়ি কোন
দেশে? সুইজারল্যান্ডে, আবার কোথায়? একটা বরফ ঢাকা পাহাড়ি গ্রামে তাদের বাড়ি।
অনেক দুঃখ কষ্ট তাদের। তবুও হাসিমুখে সবকিছু মেনে নেয় তারা।মজার মজার ঘটনা ঘটে
তাদের জীবনে।
নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছা করছে, হাইডির জন্মদাতা
কে? তাঁকে তোমরা অবশ্য অনেকেই
জানো। হাইডির জন্মদাতা হলেন জোহানা স্প্রি তিনি হলেন সুইজার ল্যান্ডের প্রখ্যাত
লেখক। ১৮৮০ সালে তাঁর 'হাইডিস ইয়ার অফ
ওয়ান্ডারিং এন্ড লার্নিং' গ্রন্থে হইডিকে
প্রথম উপস্থাপিত করেন। হাইডি চরিত্রটি তার এক অপরূপ সৃষ্টি। সেই ১৮৮০ সাল থেকে আজও
হাইডি বুক ফুলিয়ে সগর্বে বিরাজ করছে সারা পৃথিবী জুড়ে।
|
|
' অ্যা লি সে র '
প্রায় দেড়শ' বছর আগে অ্যালিসের জন্ম হয়েছিল বৃটেনে।
ব্রিটিশ লেখক চার্লস লাটভিজ ডজসনের হাতে ১৮৬৫ সালে জন্ম হয় অ্যালিসের। বইটির নাম
ছিল 'অ্যালিস অ্যাডভেঞ্চার ইন
ওয়ান্ডার ল্যান্ড'। বইতে লেখক
হিসাবে তার নাম দেওয়া হয়েছিল লিউইস ক্যারল। তিনি ছদ্মনামে লেখাটি লেখেন। তিনি
ছিলেন অঙ্কের শিক্ষক। কোনদিন ভাবেন নি তিনি লেখক হবেন। কিন্তু বিধি তাকে লেখক
হিসাবে পরিচয় করে দিলেন একসময়। ছাত্র ছাত্রিদের একদিন বেড়াতে নিয়ে গিয়েছিলেন
তিনি। অ্যালিস বলে এক ছাত্রী হঠাৎ বলে বসল-- স্যার! একটা গল্প শোনান।
মনগড়া সেই গল্প বলতে বলতে জন্ম হল সেই গল্পের। গল্পে অ্যালিস হলো ফুটফুটে
একটা মেয়ে। সে খুব ভাবুক প্রকৃতির। পথে চলতে চলতে একদিন সে একটা ব্যাপারে ভাবছিল।
আর ভাবতে ভাবতে সে পড়ে গেল একটা গর্তে। সেই গর্তের সরু পথ দিয়ে চলতে চলতে সে
একদিন পৌঁছে গেল অলীক এক কল্পনার দেশে। সে দেশটা পৃথিবীর মতো নয়। সেখানে সবকিছু
উল্টোপাল্টা ব্যাপার। সেখানে ফুলেরাও মানুষজনের মত কথা বলে। গাছেরা তাদের দুঃখ
দুর্দশা তাদের আশা নিরাশার কথা জানায়। অ্যালিসকে নিয়ে অনেক মজার মজার ঘটনা ঘটতে থাকে।
বইটা পড়লে তোমরা খুব পাবে। পৃথিবীর প্রায় সব ভাষায় অনুদিত হয়েছে বইটি। এইভাবে
ডজসন হয়ে গেলেন জগৎ বিখ্যাত লেখক।
| |
' হা ক ল বে রি ফি ন '
হাইডি হল, অ্যালিস হল এবার বলি 'হাকল বেরি ফিনে'র কথা। হাকল বেরি ফিন শুধু শিশু-কিশোরদের কাছে
নয়, বড়দের কাছেও অত্যন্ত
পরিচিত। কারণ তার দুঃসাহসিক অভিযানগুলো এখনো সবার হৃদয়,মন সারা শরীর তোলপাড় করে তোলে। গা কাঁটা দিয়ে
ওঠে। তার বুদ্ধির কাছে হার মানতে হয় চোর, ডাকাতদের। সততার আদর্শে গড়া হাকল বেরি ফিনকে কেউই ভুলতে পারবে না। ভুলতে
পারবো না তার স্রষ্টাকে। ১৮৮৪ সালে মার্ক টোয়েন তার 'অ্যাডভেঞ্চার অফ হাকল বেরি ফিন' গ্রন্থে প্রথম সৃষ্টি করেন হাকাল বেরিকে।সেই
হাকল বেরি ফিন আজও বহাল তবিয়তে বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়ে সারা বিশ্বজুড়ে বিরাজ
করছে।
| |
' মো গ লি '
এবার তোমাদের মোগলির কথা শোনাই। মোগলিও আমাদের মত একটা ডনপিটে ছেলে। মোগলির
জন্ম হয় 'ইন দ্য রুখ'
নামক একটি ছোটগল্পে। পরে
১৮৯৪ সালে 'দ্য জঙ্গল বুক'
নামক গ্রন্থে মুগলির
পুনর্জন্ম হয়। গ্রন্থের রচয়িতা ছিলেন প্রখ্যাত ব্রিটিশ লেখক রুডিয়ার্ড কিপলিং।
মোগলি আর পাঁচটা সাধারণ ছেলের মত নয়। সে একটু অন্য প্রকৃতির। সে সমাজে বাস করে
না। তার নিবাস হলো জঙ্গল। জঙ্গলেই তার মন প্রাণ। টারজানের মত পশুপাখি, গাছপালা হল তার আপনজন। তাদের সাথে ভালোবাসা।
তাদের সাথে বসবাস। তবে তার বড় শত্রু হলো রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। অরণ্যের পটভূমিতে
লেখা এই গ্রন্থ আমাদের মন প্রাণ ভরিয়ে তোলে। তাই মোগলি আজও আমাদের সাথে আছে।
ভবিষ্যতেও সে থাকবে। কারণ মোগলিও একটা কালো জয়ী চরিত্র। আমাদের ভালোবাসার পাত্র।
| |
' পি টা র প্যা ন '
আমরা সকলেই চটপট বড় হতে চাই। কারণ আমরা জানি বড়দের অনেক ক্ষমতা। অনেক টাকা
পয়সা। তারা অনেক কিছু করতে পারে। আমরা ছোটরা তা করতে পারি না। তাই খুব জলদি বড়
হবার কতই না বাসনা আমাদের।কিন্তু পিটার প্যান! তোমরা চোখউল্টে নিশ্চিত জানতে
চাইছো-- সে আবার কে? কি তার পরিচয়?
কোথায় তার নিবাস?
এর উত্তর সবই তোমাদের
জানা। শুধু একটু মনে করিয়ে দিলেই হল। পিটার প্যান হলো আমাদের মত একটা ছোট বালক।
সে খুব দুষ্টু। অত্যন্ত চটপটে। তবে আমাদের কাছে যা নেই, তা আছে পিটার প্যানের কাছে।তার কাছে আছে একটা
আজব শক্তি।যে শক্তির বলে সে প্রজাপতির মত এখানে সেখানে উড়তে পারে। চলে যেতে পারে।
আজব কান্ড ঘটাতে পারে। শুধু তাই নয়, সে এমন যাদু মন্ত্র শিখেছে যার বলে সে আর বড় হয় না কখনো। বয়সটাকে বেঁধে
রেখেছি নিজের হাতে। তাই তার ছেলেবেলাও শেষ হয় না। পিটার প্যান বাস করে
নেভারল্যান্ড নামক একটি সুন্দর দ্বীপে। দস্যি ছেলেদের সে নেতা। তার জন্ম কবে?
সেই ১৯০৪ সালে।
স্কটল্যান্ডের লেখক জে. এম. ব্যারি হলেন তার জনক। পিটার প্যান নামক একটি নাটকে
পিটারের প্রথম আবির্ভাব। সেই থেকে পিটার প্যান আজও বহাল তবিয়াতে বেঁচে আছে আমাদের
হৃদয়ে।
| |
' পা গ লা দা সু '
আমাদের দেশে অনেক ডানপিটে ছেলেদের কথা লেখা
হয়েছে সাহিত্যের পাতায়। অনেক কমিকস চরিত্র আছে, যেগুলো গভীরভাবে আমাদের মনকে নাড়া দেয়। তাদের
কান্ডকারখানা পড়ে আমরা আনন্দে আপ্লুত হই। অনেক কিছুই জানতে পারি। আমাদের বুদ্ধি
লজিক্যাল হয়। কিন্তু এই মুহূর্তে যে ডানপিটে ছেলের কথা মনে পড়ছে সে হলো দাসু।
যাকে আমরা পাগলা দাসু হিসেবে চিনি। সে যদি একবার ক্ষেপে যায়, তাহলে আর নিস্তার নেই। আজব সব কান্ড কারবার করে
বসে। গোলমাল পাকিয়ে দেয়। তার হাত থেকে রেহাই পায় না মাস্টার মশাইরাও। ডানপিটে
এই পাগলা দাসুর দস্যিপনা নিয়ে সুকুমার রায় লিখেছিলেন 'পাগলা দাসু' নামক একটি বই। দুর্ভাগ্য আমাদের, সে বইটি প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৪০ সালে।লেখকের
মৃত্যুর পর। তবে সুন্দর বিষয় হল বইটির ভূমিকা লিখেছিলেন বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুর স্বয়ং। আজও পাগলা দাসু দাপিয়ে বেড়ায় আমাদের হৃদয়ে। মুখে ফুটিয়ে তোলে
মুচকি হাসি।
| |
' হে ন রি '
গাবলুকে তোমরা চেনো? লাল গেঞ্জি, কালো হাফ প্যান্ট, মাথা নাড়া, কানে গোঁজা পেন। না, না, ছেলেটি মিসিং হয়নি কোথাও। আমাদের দেশে এবং প্রতিবেশী বাংলাদেশের পত্র
পত্রিকাতে, বইয়ের পাতায়
প্রায় দেখে থাকি তাকে। আমরা তাকে গাবলু হিসেবে চিনি। আসলে সে গাবলু না, তার আসল নাম হল হেনরি। পৃথিবীতে যত গুলো কমিকস
চরিত্র রাজ করছে তার মধ্যে অন্যতম কমিকস হিরো হল হেনরি। তার জন্ম হয়েছিল
কার্টুনিস্ট কার্ল আন্ডারসনের হাতে। ১৯৩২ সালে ৬৭ বছর বয়সে আন্ডারসন হেনরির প্রথম
ছবি আঁকেন। তারপর থেকে আজও পর্যন্ত পৃথিবী পরিক্রমায় ব্যস্ত আছে গাবলু বেশি
হেনরি।
| |
' টি ন টি ন '
টিনটিনকে চিনি না, একথা কেউ যদি বলে, সে কথা কোন কালেই বিশ্বাস করবে না কেউ। কারণ টিনটিনের মতো একজন সাহসী কিশোর
ইতিমধ্যে সারা পৃথিবী ঘুরে ফেলেছে। বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে তার কর্মকাণ্ড।
তার বুদ্ধিদীপ্ত কথাবার্তা, তার চালচলন, বিস্ময় জাগিয়ে এসেছে এতকাল। কারণ সে হলো বিশ্বের কমিকস জগতের সবচেয়ে
জনপ্রিয় গোয়েন্দা নায়ক। যেমন সাহসী, তেমন দুঁদে গোয়েন্দা। ভ্রমন প্রিয় এই কিশোর গোয়েন্দা যেখানেই বেড়াতে গেছে, যে দেশে ঘুরতে গেছে সেখানেই জড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন ঘটনায়। আবার অনেক সময়
রহস্যের গন্ধ পেয়ে নিজেই হাজির হয়েছে ঘটনাস্থলে। অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার সাথে
ডিটেকশন করেছে সব কেস। হাতেনাতে ধরে ফেলেছে সব বড় বড় অপরাধীদের। রহস্যের কিনারা
করতে গিয়ে নিজের জীবনকেও বাজিয়ে রেখেছে অনেক সময়। এরকম একটা চরিত্র আমরা কি না
পড়ে থাকতে পারি?কিন্তু কে তার স্রষ্টা? তার নাম কি জানো? তার নাম জর্জেস রেমি। তিনি হলেন বেলজিয়ামের বিখ্যাত লেখক ও কাটুনিস্ট। তাঁর
হাতেই জন্ম হয় টিনটিনের। ১৯২৯ সালে।
| |
' হ্যা রি প টা র '
এতক্ষণে তোমরা
বলতে শুরু করে দিয়েছো, হ্যারি পটার কই?
তার কথা না বলে আমি এ
লেখা শেষ করি ক্যামনে? তার কথা তো বলতেই
হবে। কারণ বর্তমান কালে হ্যারিপটার হল সবচেয়ে এক জনপ্রিয় কিশোর চরিত্র। এ কাহিনি
লিখেছেন একজন ব্রিটিশ লেখিকা। তার নাম জে. কে. রোলিং। ১৯৯৭ সালে প্রথম প্রকাশ পায়
সেই গ্রন্থ। গ্রন্থটির নাম 'হ্যারিপটার
অ্যান্ড দ্য ফিলোসফারস স্টোনিং'। এই বইতে
হ্যারিপটারকে নিয়ে আজব আজব ঘটনার কথা উল্লেখিত হয়েছে। হ্যারি পটারকে নিয়ে ঘটেছে
অদ্ভুত সে সব ঘটনা। হ্যারিপটার ভর্তি হয়েছে এক আজব স্কুলে। সেই স্কুলে শুধু জাদু
শেখানো হয়।সেখানেও তাকে নিয়ে অদ্ভুত সব কান্ড।যে কান্ডের শেষ নেই। আজও সারা
বিশ্ব জুড়ে একের পর এক বই বার হচ্ছে লেখিকার। চড়া দামে সে বই কিনে আনতে বায়না
করছি আমরা। আর এক নিমেষে তা পড়ে ফেলছি। আমাদের মনে, দুনিয়া জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে হ্যারিপটার।
কেনো ? তা আমি বলব কি করে?
সে তো সব তোমরাই জানো।
| |
' বু ড়ো আং লা '
আমাদের ছেলেবেলায় স্কুল লাইব্রেরী থেকে পড়া
একটা বইয়ের কথা না বললেই নয়। যে বইটি আজও গভীরভাবে রেখাপাত করে আমার মনে। শুধু
আমার মন নয়, সবার মন জুড়ে
আজও সে কাহিনি বিদ্যমান। এক দুষ্টু ছেলের কথা দিয়ে শুরু হয়েছে সে কাহিনি। সেই
দুষ্টু ছেলেটির নাম রিদয়। লেখক শুরু করেছেন এইভাবে। 'রিদয় বলে ছেলেটি
নামেই হৃদয়, দয়ামায়া একটুও
ছিল না। পাখির বাসায় ইঁদুর, গরুর গোয়ালে
বোলতা, ইঁদুরের গর্তে জল,
বোলতার বাসায়
ছুঁচো...এমনি নানা উৎপাতে সে মানুষ, পশুপাখি, কীটপতঙ্গ,
সবাইকে এমন জ্বালাতন
করেছিল যে কেউ তাকে দু'চক্ষে দেখতে পারত
না'। সেই রিদয় একদিন হঠাৎ চালাকি করতে গেল গণেশ ঠাকুরের সাথে।গনেশ ঠাকুর সাথে
সাথে তাকে অভিশাপ দিল। সেই শাপে রিদয় রিদয় হয়ে গেল দেড় আঙুলের মত। আর সেইক্ষণে
তার চেনা জানা পৃথিবীটা কেমন যেন পাল্টে গেল। সবকিছু যেন তার কাছে বড় হয়ে ঠেকল।
ছোট্ট মুরগিটা ঘাড় ফুলিয়ে তেড়ে গেল তার দিকে। সে একসময় বক হয়ে গেছে। তাকে
মানুষ হতে হলে যেতে হবে কৈলাসে। সেখানে সন্ধান করতে হবে গণেশ ঠাকুরকে। চাইতে হবে
ক্ষমা।তাই একদিন সুবচনী হাঁসের পিঠে চেপে কৈলাসের দিকে যাত্রা শুরু করে। সে
উত্তেজনা ভরা দুরন্ত অভিযান কাহিনি।অপরূপ নিসর্গের ছবি। বা পাঠ করলে অনয়াসে
আমাদের মনের দরজা খুলে যাবে।জানাশোনা পৃথিবীটা হয়ে যাবে অনেকটা বড় সম্প্রসারিত।
আশ্চর্য এক অনুভবে ভরে উঠবে আমাদের হৃদয়। আমাদের মন। দেহের প্রতিটি সত্তা। কি বলছ, বইটার নাম কি?
কে লিখেছেন? তা তো বলতেই হবে। বইটির নাম 'বুড়ো আংলা'।ওই বইটি লিখেছেন অবন ঠাকুর। যার ভালো নাম হলো
অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি একজন বিখ্যাত চিত্রশিল্পীও বটে। তিনি এক জায়গায়
লিখেছেন--'সব ছেলের মনের
সিন্দুকে একটি করে লুকানো দেরাজ আছে। চাবি ছেলেরা হারিয়ে ফেললে মুশকিল হবে। তাই
এই লুকানো দেরাজে চাবি নেই। একটা করে খিল আছে, সেইটে সরিয়ে দিলেই দেরাজটি আপনি খুলে যায়।
সেইখানে সবার সবুজপাতায় বাঁধানো এতটুকু খেলার খাতাখানি। সারাদিন সে যা খেলেছে,
যা দেখেছে, যা পেয়েছে, যা হারিয়েছে, আর যা পেতে চায়, খুঁজে বেড়ায়, এমনকি রাতের স্বপ্নের ছবিও এই ছোট্ট খাতায় রোজ
রোজ নতুন করে লেখা হয়ে যাচ্ছে। ...অনেক ছেলে দেখেছি বুড়ো হয়ে মরে গেল তবুও এই
সবুজ খাতা, লুকানো দেরাজের
সন্ধানই পেল না।
| |
পৃথিবীতে শিশু-কিশোরদের হিরো করে এরকম বহু চরিত্র সৃষ্টি করা হয়েছে। তাদের
আচার-আচরণ, তাদের কার্যকলাপ,
তাদের চিন্তাধারা আমাদের
মনকে প্রফুল্ল করে। জানার আগ্রহকে বাড়িয়ে তোলে। বুদ্ধি ক্ষুরোধার করে।
জ্ঞানার্জন করতে, কল্পনাকে
প্রসারিত করতে, এই সব বইয়ের
জুড়ি নেই। কিন্তু খবরদার, তোমরা যেন ওদের
মতো সুপারহিরো হতে যেও না। ফ্যান্টাসি, অতি মানবিকতা আমাদের লক্ষ্যকে, আমাদের ভাবনাকে
প্রসারিত করে ঠিকই, তবে অনেক সময়
ভুলিয়ে দেয় বাস্তবতাকে। যে কারণে বিপদের সম্মুখীন হই আমরা। কোন কিছু করার আগে
আমাদেরকে ভাবতে হবে, বড়দেরকে
জিজ্ঞাসা করে নিতে হবে, বাস্তবতাকে চিনতে
হবে, এ কথা কোন সময়ই ভোলা
চলবে না।
|