ছোটোবেলা (মাত্র সাড়ে তিন
বছর) থেকেই আবৃত্তি শেখার শুরু আমার। ছোটোদের আবৃত্তি মানেই কবি ভবানীপ্রসাদ
মজুমদার। এত্ত এত্ত ভালো লাগত, যে কবির
সঙ্গে দেখা হওয়াটার খুব ইচ্ছে ছিল। সে সুযোগ এসেও গেল। সে সময়ে অসিতবাবুর (পদবি
মনে নেই) ‘সড়গড়’ বলে একটি পত্রিকার
গল্প লেখো প্রতিযোগিতার আহ্বান চোখে পড়ে আমার। আনন্দবাজার পত্রিকায় সে বিজ্ঞাপন
দেখার পরই আমি পোস্টে করে আমার জীবনের প্রথম লেখা গল্পটি পাঠিয়ে দিই। তখন চতুর্থ
শ্রেণি আমার। অনেকদিন খবর নেই। তারপর একদিন হঠাৎ করেই একটি চিঠি আসে, তাতে জানানো হয় যে আমি সেই প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অধিকার করেছি। মিলেনিয়াম
পার্কে একটি বিশেষ দিনে আমাদের পুরস্কার দেওয়া হবে। ওখানে পৌছেই জানতে পারি,
যে বিখ্যাত কার্টুনিস্ট চণ্ডী লাহিড়ী, সঞ্জীব
চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে ছড়া সম্রাট ভবানীপ্রসাদ মজুমদার সবাই থাকবেন। অনেকেই
দেখলাম অটোগ্রাফ নিচ্ছেন। আমিও আমার কবিতার ডায়েরিটা নিয়ে প্রত্যেকের কাছেই গেলাম।
কবি ভবানীপ্রসাদ মজুমদার জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কোথায় থাকো,
কী করো?’ সবটুকু শুনে নিয়ে উনি বললেন,
‘দাও দেখি খাতাটা।’ আমার জীবনের সেরা
অটোগ্রাফটা উনি দিয়েছিলেন সেই কবিতার ডায়েরিতে। লেখা ছিল—
‘স্নেহের সোনা শুভায়ু দে ভদ্রেশ্বরে
থাকে
মনের কোণে স্বপ্ন বোনে, রঙিন ছবি আঁকে।’
এরপর নিজের ফোন নম্বরটিও
যত্ন করে দিয়েছিলেন।
কবিকে একদিন ফোনও
করেছিলাম। একটি প্রজেক্টের ব্যাপারে কয়েকজনকে পাঠিয়েওছিলাম তাঁর হাওড়ার বাড়িতে।
উনি যত্ন করে তাদের অনেক সাহায্যও করেছিলেন। বড়ো ভালো মানুষ উনি। খুব ভালো থাকুন।